1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১২ শিক্ষার্থী কোথায়?

সমীর কুমার দে ঢাকা
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

রাজধানীর মহাখালী ও তেজগাঁও এলাকা থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১২ শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়েছে বলে দাবি করেছে তাদের পরিবার৷ তারা এখন কোথায় আছে? তাদের অপরাধই বা কী? এসবের কিছুই জানতে পারছে না পরিবারের সদস্যরা৷

ছবি: DW/Samir Kumar Dey

রবিবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের কার্যালয়ে ১২ শিক্ষার্থীর স্বজনরা সাংবাদিক সম্মেলন করেন৷ সেখানে স্বজনদের দ্রুত মুক্তি দাবি করেছেন তারা৷ অপরাধ করলে কোর্টে পাঠানোর কথাও বলেছেন৷ 

‘‘আমার ভাইকে ছাত্রাবাস থেকে তুলে নেয়া হয়েছে’’ (প্রতীকী ছবি)

This browser does not support the audio element.

নিখোঁজ ১২ শিক্ষার্থীর একজন মুজাহিদুল ইসলাম৷ তিনি বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র৷ তাঁর বাবা মাহবুব আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘৫ সেপ্টেম্বর ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তেজগাঁও এলাকা থেকে ৫২ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়৷ এদের মধ্যে ৪০ জনকে ডিবি অফিস থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ তাই আমাদের মনে হয় বাকি ১২ জনও ডিবি অফিসেই আছে৷'' 

তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে ডিবি অফিসে গিয়ে একজন কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেছি৷ ডিবি অফিসে একটি দরজার বাইরে আমি আমার ছেলের জুতো দেখেছি৷ আমার বিশ্বাস ছেলে ওখানেই আছে৷ কিন্তু কোন কর্মকর্তাই এ ব্যাপারে কোন তথ্য দিচ্ছেন না৷''

এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেবেন জহিরুল ইসলাম হাসিব৷ তাঁকেও আটক করে নিয়ে যায় ডিবি পরিচয়ধারীরা৷ তাঁর বাবা এনামুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কোটা আন্দোলন যখন চলে, তখন আমার ছেলে বাড়িতে ছিল৷ ও কোন রাজনীতি করে না৷ কেন তাঁকে ধরা হয়েছে আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না৷ আমি চাই ওকে দ্রুত আদালতে পাঠানো হোক৷'' 

‘‘আইন সবার মেনে চলা উচিত’’

This browser does not support the audio element.

ঢাকা পলিটেকনিকের ৮ম সেমিস্টারের ছাত্র ইফতেখার আলম৷ তাঁর ভাই রাশেদ আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমার ভাইকে ছাত্রাবাস থেকে তুলে নেয়া হয়েছে৷ কী অপরাধে তাঁকে তুলে নেয়া হয়েছে আমরা কিছুই জানতে পারছি না৷ যাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে শুনেছি, ওদের উপর নাকি নির্যাতন করা হচ্ছে৷''

আরো যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন আল আমিন, জাহাঙ্গীর আলম, সাইফুল্লাহ বিন মনসুর, গাজী এম বোরহান উদ্দিন, তারেক আজিজ, মাহফুজ, রায়হানুল আবেদীন, তারেক আজিজ ও মেহেদী হাসান রাজীব৷ এরা সবাই শিক্ষার্থী৷ এসব শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর এই শিক্ষার্থীদের আদালতে তোলার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তাদের বেআইনিভাবে আটকে রেখেছে পুলিশ৷ 

‘‘ডিবি অফিসে একটি দরজার বাইরে আমি আমার ছেলের জুতো দেখেছি’’ (প্রতীকী ছবি)

This browser does not support the audio element.

সাইফুল্লাহ বিন মনসুর নামের এক শিক্ষার্থীর বাবা মনসুর রহমান সাংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর মহাখালী ও তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি এই ১২ জনকেও ধরে নিয়ে যায় পুলিশ৷ এর মধ্যে সিফাত নামের এক শিক্ষার্থীসহ আরও কয়েকজনকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) কার্যালয় থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও মুক্তি মেলেনি তাঁর ছেলেসহ ১২ জনের৷ 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই ১২ জনের বিষয়ে আমি বলতে পারব না৷ তবে ছাত্র আন্দোলনের সময় অনেকে পরিচয় গোপন করে সহিংসতায় অংশ নিয়েছে৷ তাদের ব্যাপারে তদন্ত করে আটক করা হচ্ছে৷ কেউ অপরাধ করলে তাঁর বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নিতে হবে৷'' 

‘‘ছাত্র আন্দোলনের সময় অনেকে পরিচয় গোপন করে সহিংসতায় অংশ নিয়েছে’’

This browser does not support the audio element.

এই ১২ শিক্ষার্থী অপরাধী হলে কেন তাদের আদালতে পাঠানো হচ্ছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ যাদের গ্রেফতার করে তাদের আইন অনুযায়ী আদালতে হাজির করে৷ আমরা কাউকে গ্রেফতার করলে অবশ্যই কোর্টে হাজির করব৷''

উল্লেখ্য, কাউকে গ্রেফতারের পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার আইনি বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে৷ বাংলাদেশে এই সংস্কৃতি কেন চালু হচ্ছে না জানতে চাইলে মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আইন তো সবাইকে মানতে হবে৷ পাকিস্তান আমলে যখন বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তখনও কিন্তু তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়েছে৷ এখন যদি এটা না করা হয় তা দেশের আইনের শাসনের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য এমনকি মানবাধিকারের জন্যও বড় হুমকি৷ আসলে আইন সবার মেনে চলা উচিত৷ যারা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করছেন তাদের বিশেষ করে এটা মনে রাখতে হবে৷'' 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ