1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১৪টি মন্দির ভাঙার পরে পুলিশ আসিলো

৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ঠাকুরগাঁয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ২০টিরও বেশি প্রতিমা ভাঙা হয়েছে৷ শনিবার রাতে একে একে তিনটি ইউনিয়নের ১৪টি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙা হলেও পুলিশ আসেনি৷ ঘটনায় জড়িতদের একজনকেও এখনো গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ৷

Bangladesch | Vandalismus in hinduistischen Tempeln
ছবি: Partho Sarothi Das

পুলিশ বলছে, এই ঘটনা পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যমূলক৷ যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে৷

কয়েকদিন আগে লক্ষ্মীপুজা হয়ে গেছে৷ সামনে আর কোনো বড় পূজা নেই৷ এমন সময়ে এতগুলো মন্দিরে হামলা চালালো কারা? তাদের উদ্দেশ্য কী?

স্থানীয়রা জানান, শনিবার গভীর রাত থেকে রবিবার ভোর রাতের মধ্যে ১৪টি মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটানো হয়েছে৷ যারা করেছেন তারা একই সময়ে একযোগে এটা করেছেন বলে ধারণা করছেন তারা৷

উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন ধনতলা, চাড়োল ও পাড়িয়া ইউনিয়নের গ্রামের মন্দিরে এসব ভাঙচুর চালানো হয়৷ এই তিনটি ইউয়িনের সংযোগস্থলে মন্দিরগুলো৷ পাশেই লাহিড়ী হাট নামে একটি বাজার আছে৷

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যানাথ বর্মন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ধনতলা ইউনিয়নে ৯টি, চাড়োল ইউনিয়নে একটি এবং পাড়িয়া ইউনিয়নে চারটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে৷”

ব্যক্তি নয়, সম্প্রদায়কেই তারা টার্গেট করেছে: বিদ্যানাথ বর্মন

This browser does not support the audio element.

তিনি আরো বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় মন্দির ধনতলার সিন্দুর পিন্ডির মন্দিরের আটটি প্রতিমার সবকটিই ভেঙে ফেলা হয়ছে৷ তার উত্তর দিকে দুইটি মন্দিরের দুইটি প্রতিমা ভাঙা হয়েছে৷ এখানেই ভাঙা হয়েছে ১০টি প্রতিমা৷”

এই ইউনিয়নে পাঁচটি মনসা মন্দির, একটি লক্ষ্মী মন্দির ও একটি কালী মন্দিরের প্রতিমাও ভাঙা হয়েছে৷ পাড়িয়া ইউনিয়নে একটি বুড়া-বুড়ি মন্দির, একটি লক্ষ্মী মন্দির, একটি আমাতি মন্দির এবং একটি মাসানমাঠ মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে৷ এছাড়া চাড়োল ইউনিয়নে একটি কালীমন্দিররের প্রতিমাও ভাঙা হয়েছে৷

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যানাথ বর্মন জানান, প্রতিমাগুলোকে ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ করা হয়েছে৷  কিছু প্রতিমা ভেঙে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়া হয়েছে৷

বিদ্যানাথ বর্মন আরো বলেন, ‘‘আমার জানা মতে অতীতে আমাদের এই এলাকায় এই ধরনের হামলার ঘটনা কখনোই ঘটেনি৷ ধনতলা ইউনিয়নটি হিন্দু অধ্যুষিত৷ এই এলাকাসহ আশপাশের এলাকায়  শতাধিক মন্দির আছে৷ এর আগে কখনো কোনো ঝামেলা হয়নি৷”

তিনি বলেন, ‘‘যারা এটা করেছেন, আমার মনে হয় কোনো ব্যক্তি তাদের টার্গেট নয়, সম্প্রদায়কেই তারা টার্গেট করেছে৷ এটা পরিকল্পিত  ও উদ্দেশ্যপূর্ণ৷ তবে কারা করেছে তা আমরা বুঝতে পারছি না৷ আমি নিজেও অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি৷ ঘটনার সময় কেউ দেখেছে- এখনো এমন কাউকে পাইনি৷”

বিদ্যানাথ বর্মন জানান, ‘‘এখন র‌্যাব ও পুলিশ টহল দিচ্ছে৷ তারা তদন্ত করছে৷ তবে আমরা আতঙ্কে আছি৷ যারা করেছে, তাদের আরো বড় কোনো খারাপ উদ্দেশ্য থাকতে পারে৷”

এই হামলা পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক: মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন

This browser does not support the audio element.

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ১৪টি মন্দিরের অন্তত ২০টি প্রতিমা ভাঙার বিষয়ে বলেন, ‘‘যেভাবে একই সময়ে একযোগে মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে  বিষয়টি সিরিজ বোমা হামলার মতো৷ যারা হামলা করেছেন, তারা একযোগে হামলা চালিয়ে চলে গেছেন৷”

তিনি বলেন, ‘‘অতীতে পূজার সময় বিচ্ছিন্নভাবে দুই-একটি প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে৷ কিন্তু এইরকম আগে কখনো ঘটেনি৷”

ঘটনার জন্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে সন্দেহ করেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘কারা এটা করেছে তা এখনো বুঝতে পারছি না৷ এসপি ও ডিসি সাহেব এলাকা ঘুরে গেছেন৷ পুলিশ তদন্ত করছে৷ হয়তো জানা যাবে৷”

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, মামলা হয়েছে কিন্তু এখনো কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা জোর দিয়ে তদন্ত করছি৷ আশা করছি. সবকিছু স্পষ্ট হবে৷ তবে এটা পরিস্কার যে, এই হামলা পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক৷” ওই এলাকায় কোনো সিসি ক্যামেরা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘পাশের বাজারে আছে, কিন্তু যেসব এলাকায় মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে সেই এলাকায় নেই৷ আর ওই মন্দিরগুলোতে রাতে কেউ থাকেন না৷”

দায়ীদের আইনের আওতায় আনার ওপর জোর দিচ্ছি: মো. মাহবুবুর রহমান

This browser does not support the audio element.

এখন পুলিশি নিরাপত্তা দেয়া হলেও ওই এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে আছেন৷ এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে৷

তবে ঠাকুরগাঁও জেলার ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেছেন, ‘‘যে ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়৷ তবে আতঙ্কের মতো কোনো পরিস্থিতি নেই৷ ঘটনার পরই পুলিশ সুপারকে নিয়ে এলাকায় গিয়েছি৷ আমাদের সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারাও ছিলেন৷ আমরা ওই এলাকার মানুষের সঙ্গে আছি৷”

তার কথা, ‘‘আমরা এথন কারা এটা ঘটিয়েছে তা বের করে তাদের আইনের আওতায় আনার ওপর জোর দিচ্ছি৷ পুলিশ কাজ করছে৷ আর ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিয়েও আমরা কাজ করছি৷”  তিনি বলেন, ‘‘ওই এলকায় অতীতে এই ধরনের ঘটনার কোনো নজীর নেই৷ তাই কারা কোন স্বার্থে এটা করেছে তা আমরা জানার চেষ্টা করছি৷”

২০২১ সালের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ