1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১৪৮ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট-পেজ বন্ধ, ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ

সমীর কুমার দে ঢাকা
১ জুন ২০২৪

সংঘবদ্ধভাবে অসত্য প্রচারের কারণে বাংলাদেশের ৫০টি ফেসবুক আইডি ও ৯৮টি পেজ বন্ধ করেছে ফেসবুক৷ এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও দলটির গবেষণা সেল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফর্মেশন (সিআরআই)-এর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে মেটা৷

মেটা লোগোসহ প্রতীকী ছবি
মেটার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চক্রটি বাংলাদেশভিত্তিক এবং এদেশের মানুষই ছিল তাদের প্রধান টার্গেট৷ ছবি: Rafapress/Zoonar/IMAGO

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এসব ‘অপকর্মের' নেপথ্যে যারা রয়েছে, তারা ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে, যার অনেকগুলো স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মধ্য দিয়েই চিহ্নিত হয়েছে এবং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা-র ২০২৪ সালের প্রথম ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে৷

মেটা যেসব অ্যাকউন্ট বন্ধের কথা বলেছে তার মধ্যে আওয়ামী লীগের গবেষণা সেল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের সমন্বয়ক তন্ময় আহমেদের টুইটার অ্যাকাউন্টও (twitter[.]com/tonmoybuet) রয়েছে৷ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তন্ময় আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ফেসবুক যেভাবে লিখেছে, তা দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি৷ এভাবে তো তারা লিখতে পারে না৷ এই আইডি বা পেজগুলো কারা চালায়, সেটা তো তারা নিশ্চিত নয়৷ কিন্তু তারা ঢালাওভাবে যে অভিযোগ করেছে, সেটা সত্যি নয়৷ আবার ওই তালিকায় আমার টুইটার অ্যাকাউন্টের কথা বলা হয়েছে, অথচ আমার টুইটার অ্যাকাউন্টটি চালু আছে৷ শিগগিরই আমি আমার ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে সবাইকে বিষয়টি জানাবো৷’’

এই ১৪৮টি পেজ ও আইডি বন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কিছু জানে কিনা জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই৷ আমরা তাদের কাছে কিছু আইডি বা পেজের ব্যাপারে সুপারিশ করি, সেগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়৷ এগুলো তারা কিভাবে করেছে, আমরা কিছুই জানি না৷”

এ ব্যাপারে অবশ্যই আমরা কিছু একটা করবো: ড. সেলিম মাহমুদ

This browser does not support the audio element.

মেটার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চক্রটি বাংলাদেশভিত্তিক এবং এদেশের মানুষই ছিল তাদের প্রধান টার্গেট৷ এই পেজগুলোর মধ্যে কোনো কোনোটি একেবারে কল্পিত কোনো সংস্থার পরিচয় দিয়েছে৷ আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমের নাম ব্যবহার করেছে৷ কিছু পেজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নাম ব্যবহার করেছে এবং বিএনপিবিরোধী কনটেন্ট পোস্ট করেছে৷ এসব পেজের বিচরণ ইউটিউব, এক্স (সাবেক টুইটার), টিকটক, টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মেও ছিল৷ পাশাপাশি নিজেদের ওয়েবসাইটও ছিল৷

এই ধরনের অপপ্রচারের বিষয়ে জানতে চাইলে চাইলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-র সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উপ-মহাপরিদর্শক শ্যামল কুমার নাথ ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এই ১৪৮টি পেজ বা আইডির ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না৷” তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)-র সাইবার ক্রাইম বিভাগের উপ-কমিশনার তারেক আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, "বিভিন্ন ঘটনায় আমরা ফেসবুকের কাছে তালিকা পাঠাই৷ সেখানে এই নামগুলো আছে কিনা, সেটা তো না দেখে বলা যাবে না৷ তবে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত আইডি বা পেজগুলোর বিরুদ্ধেই আমরা রিপোর্ট করি৷ যে পেজ বা আইডিগুলো বন্ধ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিল, সেটা তো আমরা জানি না৷” 

মেটার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চক্র প্রধানত বাংলা ভাষায় এবং ইংরেজিতে বাংলাদেশের রাজনীতি, নির্বাচন, বিএনপির সমালোচনা, বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, নির্বাচনপূর্ব সহিংসতায় বিএনপির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নিয়ে সংবাদ ও চলতি ঘটনা পোস্ট করতো৷ পাশাপাশি বর্তমান সরকার, ক্ষমতাসীন দল এবং বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে এর ভূমিকা এসব সমর্থন করে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করতো৷

আমরা সরাসরি মেটার কাছে কোনো অভিযোগ করিনি: জহির উদ্দিন স্বপন

This browser does not support the audio element.

মেটা বলছে, তারা অনুসন্ধানে এসব কর্মকাণ্ড স্প্যাম ও অসত্য কর্মকাণ্ড বলে দেখতে পেয়েছে৷ যদিও এর নেপথ্যের ব্যক্তিরা তাদের পরিচয় গোপন করার চেষ্টা করেছে, তারপরেও মেটার অনুসন্ধানে আওয়ামী লীগ এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফর্মেশন সিআরআইর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে৷ সরিয়ে দেওয়া আইডি ও পেজগুলোতে সম্মিলিতভাবে প্রায় ৩৪ লাখ ফলোয়ার ছিল৷ এসব পেজ থেকে ৬০ ডলার বিজ্ঞাপনের জন্য খরচের কথাও জানিয়েছে মেটা, যা টাকায় পরিশোধ করা হয়েছে৷

এই আইডি বা পেজগুলোর বিরুদ্ধে বিএনপি কোনো অভিযোগ করেছিল কিনা জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহবায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা সরাসরি মেটার কাছে কোনো অভিযোগ করিনি৷ কিন্তু আমরা আগাগোড়াই বলে আসছি, আমাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার করছে৷ এতদিন এগুলো রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে কেউ গুরুত্ব দেয়নি৷ কিন্তু এখন মেটা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় প্রমানিত হলো, আমরা যে অভিযোগ এতদিন করে আসছিলাম, সেটা সত্যি৷ বিএনপির নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে, আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো, কিন্তু এখানে কোনো ধরনের অপপ্রচার, মিথ্যা বা বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রচার করবো না৷ অথচ আমাদের বিরুদ্ধে এগুলো হচ্ছে৷”

তবে মেটার এই ধরনের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এভাবে একটা দলের বিরুদ্ধে লিখতে পারে না৷ ওই আইডি বা পেজগুলো কারা চালাতো? কোনো বিএনপি সমর্থকও ওগুলোর মালিক হতে পারেন৷ আবার সারা বিশ্বে আমাদের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, সেটা তো তারা দেখলো না৷ বিদেশে বসে পিনাকি কী করছে, অন্যরা কী করছে? আমি তো মনে করি, এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত৷ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পরই তো প্রযুক্তির এত উন্নতি হয়েছে৷ এখন সেই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে যা ইচ্ছে তাই করা হবে, সেটা তো মেনে নেওয়া যায় না৷ বাংলাদেশে এগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি থাকা জরুরি৷ আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলবো৷ এ ব্যাপারে অবশ্যই আমরা কিছু একটা করবো৷” 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ