এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপের অনেক দেশেই রয়েছে বহু শরণার্থী৷ তাদের কিছু দেশের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ৷
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর সোমবার জানিয়েছে, আগামী বছরের মধ্যে ৬০টি দেশে বসবাসরত প্রায় ১৫ লক্ষ শরণার্থীদের পুনর্বাসনের প্রয়োজন পড়বে৷
বর্তমান অবস্থায় এই শরণার্থীদের বেশির ভাগ বাস করছেন হাতে গোনা কিছু দেশেই৷ইউএনএইচসিআর-এর প্রধান ফিলিপো গ্রান্দি বলেছেন, আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে এই দায়ভার এই দেশগুলি থেকে কমাতে অন্যান্য দেশের উচিত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা৷
জরুরি ভিত্তিতে সাহায্য প্রয়োজন আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোর, কারণ সেখানে বাস করেন প্রায় সাড়ে চার লক্ষের কাছাকাছি শরণার্থী, যা তাদের সামর্থ্যের তুলনায় অনেকটাই বেশি৷ তুরস্কে বাস করছেন প্রায় ৪২০,০০০ শরণার্থী এবং মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় ২৫০,০০০জন৷ আগামী বছরের মধ্যে এই অঞ্চলগুলির চাপ কমাতে অন্যান্য দেশের উচিত এগিয়ে আসা, জানালেন ফিলিপো৷
কোন কোন দেশের শরণার্থী বেশি?
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী সারা বিশ্বে এখন ২ কোটি ৫৯ লাখ শরণার্থী রয়েছে৷ এর মধ্যে
কোন দশটি দেশের শরণার্থী সবচেয়ে বেশি? দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Karadjias
১০. বুরুন্ডি
ইউএনএইচসিআর বলছে, ২০১৮ সালে সারা বিশ্বের অন্তত সাত কোটি ৮০ লাখ মানুষ সংঘাত, সহিংসতা বা নির্যাতনের কারণে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে৷ আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডির অনেক মানুষই এখন দেশছাড়া৷ ২০১৭ সালে এমন মানুষের সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৮৭ হাজার ৯০০৷২০১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে চার লাখ ৩৯ হাজার ৩০০৷
ছবি: DW/Prosper Kwigize
৯. ইরিত্রিয়া
উত্তর আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়ার চার লাখ ৮৬ হাজার ২০০ মানুষ শরণার্থীর জীবন মেনে নিয়েছিল ২০১৭ সালে৷ ২০১৮ সালে সংখ্যাটি পাঁচ লাখ সাত হাজার ৩০০ হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Haileselassie
৮. সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের শরণার্থী সংখ্যা ২০১৭ সালের পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে পাঁচ লাখ ৯০ হাজার ৯০০ হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Belluz
৭. ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো
২০১৮ সালে সেন্ট্রাল আফ্রিকার এই দেশের শরণার্থীও বেড়েছে৷ সংখ্যাটি এখন সাত লাখ ২০ হাজার ৩০০৷
ছবি: Imago Images/Xinhua/A. Uyakani
৬. সুদান
সুদানের শরণার্থীর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে৷ ২০১৭-র ছয় লাখ ৯৪ হাজার ৬০০ ২০১৮ সালে বেড়ে সাত লাখ ২৪ হাজার ৮০০ হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B. Curtis
৫. সোমালিয়া
আফ্রিকার আরেক দেশ সোমালিয়ারও একই অবস্থা৷ ২০১৭ সালে সেই দেশের শরণার্থী ছিল নয় লাখ ৪৯ হাজার ৭০০ জন, এক বছর পর তা বেড়ে নয় লাখ ৮৬ হাজার ৪০০-তে ঠেকেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/F. Abdi Warsameh
৪. মিয়ানমার
ইউএনএইচসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী এ মুহূর্তে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ৷ বলা বাহুল্য, এর বেশিরভাগ এখন বাংলাদেশে৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
৩. সাউথ সুদান
সাউথ সুদানের শরণার্থী সংখ্যা কিছুটা কমেছে৷ ২০১৭ সালে সে দেশের মোট শরণার্থী ছিল ২৪ লাখ, ২০১৮ সালে কমে ২৩ লাখ হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/D. Kitwood
২. আফগানিস্তান
সার্বিক পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো মনে হলেও আফগান শরণার্থী কিন্তু বেড়েছে৷ ২০১৭ সালে ছিল ২৬ লাখ, ২০১৮-তে হয়েছে ২৭ লাখ৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Qureshi
১. সিরিয়া
ইউএনএইচসিআর-এর হিসেব অনুযায়ী সিরিয়ার শরণার্থীই সবচেয়ে বেশি৷ ২০১৭ সালে সেই দেশের শরণার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৩ লাখ, ২০১৮ সালে তা বেড়ে ৬৭ লাখ হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua/M. Abu Ghosh
10 ছবি1 | 10
অসম শরণার্থী বন্টনের যে সমস্যা
‘‘আমরা ইতিহাসে দেখেছি কীভাবে শরণার্থী ও অভিবাসনজনিত সমস্যাকে মোকাবিলা করতে সব দেশের মিলিত উদ্যোগের দরকার হয়৷ এর মাধ্যমেই যুদ্ধ বা অন্য কোনো বিপর্যয় থেকে পালানো মানুষদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়া যায়'', বলেন ফিলিপো গ্রান্দি৷
শুধু মধ্যপ্রাচ্য বা আফ্রিকা নয়, ২০১৫ সালে শরণার্থী সঙ্কটের প্রভাব পড়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নেও৷ ডানপন্থি চিন্তার বিকাশের ফলে সেখানেও দাবি উঠেছে মোট শরণার্থী সংখ্যার আংশিক পুনর্বাসনের৷
কিন্তু গ্রান্দির মতে, বর্তমান অবস্থায় ইউরোপের চেয়ে আফ্রিকা বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে বেশি প্রয়োজন পুনর্বাসন নীতি৷ এর কারণ হিসেবে তিনি দেখান এই অঞ্চলের দারিদ্র্য, খরা ও সার্বিক অনুন্নতিকে৷
গ্রান্দি আরো বলেন, ‘‘বিশ্বের যে অঞ্চলগুলি অভ্যন্তরীণ আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যায় জর্জরিত, সেই অঞ্চলগুলিতেই বাস করেন বিশ্বের মোট শরণার্থীর ৮৪ শতাংশ৷ এই অসাম্যজনিত সমস্যা ঠেকাতে অবিলম্বে প্রয়োজন পুনর্বাসন নীতি, যা এই অসম শরণার্থী বন্টনের চাপ থেকে মুক্ত করবে আফ্রিকা বা তুরস্কের মতো অঞ্চলকে৷''