নিলামে ১৭ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে আডল্ফ হিটলারের মূর্তি৷ ফলে বিতর্কিত এই মূর্তি নিয়ে আবার শুরু হয়েছে আলোচনা৷ মূর্তিটির স্রষ্টা জানিয়েছেন, অতীতে নিজেই মূর্তিটি অনেকবার ধ্বংস করে চেয়েছেন, কিন্তু পারেননি৷
বিজ্ঞাপন
ইটালির শিল্পী মাউরিৎসিও কাটালান মূর্তিটির স্রষ্টা৷ শিল্পী নিজেই জানিয়েছেন, জার্মানির এই নাৎসি নেতার মূর্তি তিনি শ্রদ্ধা নিয়ে গড়েননি৷ ভয়ংকর স্বৈরশাসক হলেও ইতিহাসে তার জায়গা আছে৷ ইটালীয় ভাস্কর মনে করেন, হিটলারকে ঘৃণা করলেও অগ্রাহ্য করা যায় না৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘হিটলার হচ্ছে সত্যিকারের আতঙ্ক৷ এই নামের সঙ্গে সঙ্গে মনে তীব্র এক ধরণের ব্যথার অনুভূতি জাগে৷ অনেকে তো তাঁর নামটি উচ্চারণ করতেও কষ্ট পান৷ এতকিছুর পরও নামটি আমার স্মৃতিতে ফিরে ফিরে আসে৷ ‘ট্যাবু' হলেও নামটি আমার মাথায় ঢুকে আছে৷ (এই মূর্তি) আমি নিজেই ধ্বংস করতে চেয়েছি৷ কিন্তু দিনে অন্তত হাজারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও করেছি৷''
নিউ ইয়র্কের এক নিলামে মাউরিৎসিও কাটালানের গড়া সেই মূর্তিটিই বিক্রি হয়েছে ১৭ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারে৷
মূর্তিতে হিটলারকে মোটেই দোর্দণ্ড প্রতাপশালী স্বৈরশাসক হিসেবে তুলে ধরেননি মাউরিৎসিও কাটালান৷ বরং সেখানে হিটলার দুর্বল, নতজানু৷ পেছন দিক থেকে দেখলে মনে হয় হাঁটু মুড়ে বসে প্রার্থনা করছে কোনো শিশু৷ তবে সামনে থেকে দেখলে সেই বিভ্রান্তি আর থাকে না, দেখেই বোঝা যায়, ইটালীয় শিল্পী নিজের কল্পনায় ইতিহাসের অন্যতম সেরা খলনায়ককেই তুলে ধরেছেন৷ মূর্তিটির নাম, ‘তিনি'৷
এসিবি/ডিজি (এপি, এএফপি)
স্মরণে হিটলারের পরাজয়ের দিন
৭০ বছর আগের এই দিনে প্রায় সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া যুদ্ধের দামামা বন্ধ হয়েছিল৷ সেদিনই হিটলারের বাহিনী আত্মসমর্পন করেছিল৷ তাই জার্মানি প্রতি বছর স্মরণ করে সেই দিনটিকে৷
ছবি: DW/F. Müller
দীর্ঘতম যুদ্ধের স্মৃতি
আখেন শহরের হ্যুর্টিগেনের কাছের এই জঙ্গলে হিটলারের বাহিনীর সঙ্গে মিত্র বাহিনীর ভয়াবহ যুদ্ধ হয়েছিল৷ ১৯৪৪ সালের অক্টোবরে শুরু হয়ে ১৯৪৫ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলে এই যুদ্ধ৷ তারপর আত্মসমর্পন করে জার্মানরা৷ জার্মানির মাটিতে আর কোথাও এত দীর্ঘ যুদ্ধ হয়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Oliver Berg
রেমাগেনের সেই ‘অলৌকিক’ সেতু
রেমাগেন শহরের এই সেতুটি ‘মিরাকল অফ রেমাগেন’ নামে পরিচিত৷ এমন নামকরণের কারণও আছে৷ ১৯৪৫ সালের ৭ই মার্চ প্রথমবারের মতো রাইন নদীর ওপরের এই সেতু অতিক্রম করে মিত্র বাহিনী৷ শুরু হয় জার্মান বাহিনীর বোমা বর্ষণ৷ মিত্র বাহিনী দখল করে নেয়ার দশ দিন পর ধসে পড়ে ব্রিজটি৷ কিন্তু আধুনিক জার্মানি সেই ইতিহাস ভুলেনি৷ ব্রিজটির ধ্বংসাবশেষের মধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে ‘শান্তির জাদুঘর’৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Thomas Frey
রাইশভাল্ডের সমাধি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত অ্যামেরিকান যোদ্ধাদের মৃতদেহ যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হলেও ব্রিটিশ যোদ্ধাদের জার্মানিতেই সমাধিস্থ করা হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের ১৫টি সমাধি রয়েছে জার্মানিতে৷ এর মধ্যে রাইশভাল্ড বনাঞ্চলের এই ‘কমনওয়েলথ ওয়ার সেমেট্রি’-ই সবচেয়ে বড়৷ ৭৬৫৪ জনকে সমাধিস্থ করা হয় এখানে৷
ছবি: Gemeinfrei/DennisPeeters
সবচেয়ে বড় যুদ্ধের স্মৃতি
জার্মানির মাটিতে সবচেয়ে বড় যুদ্ধটি হয়েছিল এই সিলো হাইটসে৷ ১৯৪৫ সালের ১৬ এপ্রিল বার্লিন অভিমুখে অভিযানের অংশ হিসেবে আক্রমণ শুরু করে সোভিয়েত বাহিনী৷ ৯ লাখ সৈন্য নিয়ে গড়া সোভিয়েত বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিল ৯০ হাজার জার্মান৷ অনেক সৈন্য মারা যায় সেই যুদ্ধে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Patrick Pleul
রুশ-জার্মান জাদুঘর
১৯৪৫ সালের ৮ই থেকে ৯ই মে-র মধ্যে বার্লিন-কার্লহোর্স্ট অফিসার্স মেস-এ আত্মসমর্পনের দলিলে স্বাক্ষর করে জার্মান বাহিনী৷ সেখানেও গড়ে তোলা হয়েছে জাদুঘর৷ জাদুঘরের মূল আকর্ষণ ইংরেজি, জার্মান এবং রুশ ভাষায় লেখা আত্মসমর্পনের সেই দলিল৷
ছবি: picture-alliance/ZB
সোভিয়েত সৈন্যদের স্মরণে
১ হাজার বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে ট্রেপটাওয়ারের এই স্মৃতিসৌধ৷ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় বার্লিন অভিযানে যেসব সোভিয়েত সৈন্য প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই গড়ে তোলা হয় এটি৷ স্মৃতিসৌধের মূল কাঠামোটি আসলে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দুটি প্রতীকি পতাকা৷ ‘রেড আর্মির’ প্রয়াত সদস্যদের স্মরণ করতে পতাকা দুটির আদল তৈরি করা হয়েছে লাল গ্রানাইট পাথর দিয়ে৷
ছবি: picture-alliance/ZB/Matthias Tödt
পস্টডাম সম্মেলন
নাৎসি বাহিনীর আত্মসমর্পনের পর জার্মানির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনায় বসে মিত্র শক্তির প্রধান তিন দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং রাশিয়ার প্রধান৷ পস্টডামের সেসিলিয়ানহোফ প্যালেসে বসে সেই বৈঠক৷ হ্যারি ট্রুম্যান, উইনস্টন চার্ইল এবং জোসেফ স্ট্যালিন অংশ নিয়েছিলেন সেই বৈঠকে৷