যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে যাত্রা শুরুর ১৯ ঘণ্টা পর রবিবার ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪২২ কিলোমিটার উঁচুতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র, আইএসএস-এ পৌঁছেছেন দুই মার্কিন নভচারী৷
বিজ্ঞাপন
বেসরকারি কোম্পানি স্পেসএক্স-এর তৈরি ‘ক্রু ড্রাগন' মহাকাশযানে করে আইএসএস-এ পৌঁছেন নাসার নভচারী ডুগ হার্লে ও বব বেনকেন৷ ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা টেসলার প্রধান নির্বাহী এলন মাস্ক স্পেসএক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা৷
স্পেসএক্স-এরই তৈরি ফ্যালকন রকেটে করে ক্রু ড্রাগন ফ্লরিডা থেকে রওয়ানা হয়েছিল৷
ক্রু ড্রাগন খুব ভালোভাবে ডক করেছে বলে জানিয়েছেন হার্লে ও বেনকেন৷ তাঁরা এক থেকে চার মাস আইএসএস-এ থাকবেন৷
এই প্রথমবারের মতো বেসরকারি কোনো কোম্পানির তৈরি মহাকাশযানে করে আইএসএস-এ গেলেন নভচারীরা৷
এছাড়া ২০১১ সালে নাসার স্পেস শাটল কর্মসূচি বন্ধ হওয়ার পর এই প্রথম মার্কিন নভচারীরা রাশিয়ার সহায়তা ছাড়া মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছলেন৷
স্পেস শাটল কর্মসূচি বন্ধের পর রাশিয়ার সয়ুজ যানে করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে যাতায়াত করছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নভচারীরা৷
স্পেসএক্স-এর তৈরি ক্রু ড্রাগন স্ৱয়ংক্রিয়ভাবে আইএসএস-এ ডক করতে পারে৷ এছাড়া এটি চালাতেও নভচারীদের খুব বেশি সক্রিয়তার প্রয়োজন হয় না৷
নাসা আশা করছে, স্পেসএক্স-এর সঙ্গে সহযোগিতা ভবিষ্যতে চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে৷
বিমান তৈরির প্রতিষ্ঠান বোয়িং-ও মহাকাশযান তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে৷ আগামী বছর এটি চালু হতে পারে৷
জেডএইচ/এসিবি (এপি, ডিপিএ)
মহাকাশ নিয়ে ইউরোপের পরিকল্পনা
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এসা আগামী দশকে মহাকাশে কী করবে সেই পরিকল্পনা ইতিমধ্যে করে ফেলেছে৷ ছবিঘরে থাকছে সেসব কথা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F.Gambarini
পৃথিবীকে ভালোভাবে দেখা
বিশ্বে এমন অনেক পরিবর্তন হয়, যার সম্পর্কে ভূমি থেকে তেমন ধারণা পাওয়া যায় না৷ কিন্তু মহাকাশ থেকে দেখলে ভালোভাবে পরিবর্তনটি বোঝা যায়৷ যেমন, সাগরে পিএইচ-এর পরিমাণ কমে যাওয়া, দাবানলের প্রসার, প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব ইত্যাদি৷ ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা, এসা আগামী দশকে মহাকাশে গিয়ে এসব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়ার পরিকল্পনা করছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/NASA
নতুন প্রজন্মের তারহীন যোগাযোগ
এসা আকাশে নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চাইছে৷ ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের পাশাপাশি এটি ব্যবহৃত হবে বলে দাবি করছে সংস্থাটি৷ তারা বলছে, এটি হবে নতুন প্রজন্মের তারহীন যোগাযোগ, যেখানে সবকিছু, সব জায়গায়, সবসময় যুক্ত থাকবে৷ এটি ভালো হবে, নাকি আশঙ্কার, সেই সিদ্ধান্ত আপনার৷
ছবি: picture-alliance/imagebroker/O. Maksymenko
মহাকাশ পরিষ্কার
১৯৫৭ সালে মহাকাশে ভ্রমণ শুরু হয়েছিল৷ সেই থেকে মহাকাশে অনেক স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছে, যার একটি অংশের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সেগুলো ফিরিয়ে আনা হয়নি৷ ফলে বর্তমানে আমাদের পৃথিবীর চারপাশে ৩৪ হাজারের বেশি পদার্থ ঘোরাফেরা করছে, যেগুলোর ব্যাস ১০ সেন্টিমিটারের বেশি৷ এসা একটি সক্রিয় মিশনের মাধ্যমে কিছু পদার্থ সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করছে৷
ছবি: ESA
চাঁদের কাছে স্পেস স্টেশন
আগামী দশকে গেটওয়ে নামে একটি স্পেস স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে এসা৷ সেটি চাঁদের চারপাশে ঘুরবে৷ ফলে আরও ভালোভাবে চাঁদ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করা সম্ভব হবে৷ এছাড়া মহাকাশের আরো গভীরে যাওয়ার জন্য গেটওয়ে থেকে যাত্রা শুরু করতে পারবেন নভচারীরা৷ এদিকে, ২০২২ সালে বৃহস্পতি গ্রহের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে জুস নামের একটি মহাকাশযান৷
ছবি: ESA
গ্রহাণুপুঞ্জের পথ পরিবর্তন
অ্যাস্টেরয়েড বা গ্রহাণুপুঞ্জের পথ পরিবর্তন করা সম্ভব কিনা তা জানতে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এসা একটি মিশন পরিচালনা করবে৷ এক্ষেত্রে ডিডুমস অ্যাস্টেরয়েড ও তার চাঁদ ডিডিমুনকে বেছে নেয়া হয়েছে৷ নাসা প্রথমে ডিডিমুনের দিকে সেকেন্ডে ছয় কিলোমিটার বেগে ডিএআরটি নামের একটি প্রোব ছুড়ে মারবে৷ এরপর এসার এইচইআরএ মিশন এই সংঘর্ষের প্রভাব বিশ্লেষণ করবে৷
ছবি: ESA
লঞ্চ ভেহিকল ও স্পেসপ্লেন
২০২০ সালের শেষ নাগাদ লঞ্চ ভেহিকল ‘আরিয়ান ৬’ কাজ শুরু করবে৷ আর ‘স্পেস রাইডার’ নামের একটি চালকহীন স্পেসপ্লেন ২০২২ সালে যাত্রা শুরু করার কথা৷
ছবি: ESA
গন্তব্য চাঁদ
আগামী দশকে প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় নভচারীদের চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা হচ্ছে৷ এছাড়া এসার সব নভচারী দ্বিতীয়বারের মতো মহাকাশে যাবেন৷ নাসার পাশাপাশি এসার নভচারীরা মঙ্গলেও যাবেন৷