1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন

১৮ জানুয়ারি ২০২০

নানামুখী দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে দুইদিন পিছিয়ে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ভোটের দিন নির্ধারণ করেছে কমিশন৷ শনিবার রাতে কমিশন কার্যালয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ তবে ইভিএম থাকছে৷

Bangladesch Gebäude der Wahlkommission in Dhaka
ছবি: DW/M. M. Rahman

শনিবার বিকেলে ছুটির দিনে নির্বাচন কমিশনে তারিখ নিয়ে জরুরি বৈঠক বসে৷ সিদ্ধান্ত হয় তারিখ পরিবর্তনের৷ এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পূর্বনির্ধারিত এসএসসির ১ ফেব্রুয়ারির প্রথম পরীক্ষা (বাংলা) পেছানোর অনুরোধ করে নির্বাচন কমিশন৷ সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ১ ফেব্রুয়ারির পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা পেছানোর ঘোষণার দেয়ার পর রাতে নির্বাচন কমিশন ভোটের নতুন তারিখ ঘোষণা করে৷ ঘোষণা অনুযায়ী ১ ফেব্রুয়ারি ভোট হবে৷

আর পরিবর্তিত সময় অনুযায়ী, এসএসসি পরীক্ষা ১ ফেব্রুয়ারির বদলে শুরু হবে ৩ ফেব্রুয়ারি। 

অবশেষে ঘুম ভেঙেছে কমিশনের

এর আগে দুই সিটি করপোরেশনের ভোটের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই হিন্দু বৌদ্ধ খিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদ সরস্বতী পূজার দিন ভোট না করতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানায়৷ কিন্তু তাদের এই দাবির প্রতি প্রথমটায় ভ্রুক্ষেপ করেনি কমিশন৷ এরপর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো থেকেও ভোটের তারিখ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়৷ তাতেও কর্ণপাত করেনি কমিশন৷

কমিশন যে সাম্প্রদায়িক আগেই প্রমাণ হয়েছে: রানা

This browser does not support the audio element.

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাও ভোটের তারিখ আগপিছ করতে অনুরোধ করেন৷ যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, পুরনো ঢাকা হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা৷ সেখানে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূজা হয়৷ একই দিনে পূজা আর ভোট কোনোভাবেই সম্ভব না৷ এরপর শুক্রবার সরকারী দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেন, ভোটের তারিখ পরিবর্তন হলে তাদের কোন আপত্তি নেই৷ এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু, শিক্ষক সমিতিও অনুরোধ জানায়৷

তিন দিন আগে পূজার কারণে সিটি করপোরেশন নির্বাচন পেছানোর দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷ শনিবার পর্যন্ত ১৪ জন শিক্ষার্থী অনশনে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন৷ তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও৷ এরপর ঘুম ভেঙেছে নির্বাচন কমিশনের৷

হিন্দু বৌদ্ধ খিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই কমিশন যে সাম্প্রদায়িক সেটা আগেই প্রমাণ হয়ে গেছে৷ দূর্গাপূজার সপ্তমীর দিন রংপুরে এরশাদের আসনে উপ-নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করল৷ আমরা বারবার বলার পরও সেটা পরিবর্তন করা হয়নি৷ আবার সরস্বতী পূজার দিন ঠিক করল ঢাকা সিটি করপোরেশনের ভোটের দিন৷ বারবার তারা এটা করে প্রমাণ করছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কোনো গুরুত্ব নেই এই কমিশনের কাছে৷ এই কারণে আমরা এবার শক্তভাবে কর্মসূচি দিয়েছি৷ শনিবারও আমরা সাংবাদিক সম্মেলন করে ভোটের তারিখ পূণঃনির্ধারনের দাবি জানিয়েছি৷''

দলগুলো ইভিএম মেশিন নিয়ে পরীক্ষা করে দেখুক: মোবাশ্বের

This browser does not support the audio element.

ইভিএম থাকছেই

তারিখ পূনর্নির্ধারিত হলেও ইভিএম বিতর্কে পিছু হটেনি কমিশন৷ অনেক প্রার্থীর সত্ত্বেও ইভিএমে ভোট হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম শুক্রবার এক প্রশিক্ষন কর্মশালায় বলেছেন, ‘‘যদি কেন্দ্র দখল হয় তাহলে ইভিএমেও কারচুপি সম্ভব৷ কোনো ভোটার ফিঙ্গার দিয়ে ব্যালট পেপার পেল, কিন্তু বুথে ঢুকে আরেকজন তার পক্ষে ভোট দিয়ে দিতে পারে৷''

প্রধান নির্বাচন কমিশনও শুরুতেই বলেছিলেন, যদি সব দল না চায় তাহলে ইভিএমে ভোট হবে না৷ অথচ কিছুদিন পর নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, এবার ভোট ইভিএমেই হবে৷

শনিবার ঐক্যফ্রন্টের সাংবাদিক সম্মেলনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ‘‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই ইভিএমকে সারা পৃথিবীতে বর্জন করেছে৷ এই ইভিএমকে বুড়িগঙ্গা নয়, বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়া হোক৷ এই মেশিন বাংলাদেশের মানুষ চায় না৷ এই ইভিএম ব্যবহার করতে দেয়া হবে না৷ ভোটাররা যদি বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ইভিএম ছুঁড়ে ফেলে দেয়, আমাদের বলার কিছু থাকবে না৷''

এ বিষয়ে স্থপতি মোবাশ্বর হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রোগ্রামিংয়ে যদি কিছু করা হয় তাহলেই ইভিএমে জাল ভোট সম্ভব৷ নতুবা নয়৷ এখন সব প্রার্থীর উচিৎ নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে কিছু ইভিএম মেশিন নেয়া৷ সেটা তারা পরীক্ষা করে দেখতে পারে৷ প্রোগ্রামিং ঠিক থাকলে একজনের ভোট আরেকজন কোনোভাবেই দিতে পারবে না৷ সেটা সম্ভব না৷ তবে শুধু বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা ঠিক না৷''

সব মিলিয়ে এবারের ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে ঘিরে বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না নির্বাচন কমিশনের৷ এত বিতর্কের পর আদৌ কি সম্ভব গ্রহণযোগ্য ভোটের আয়োজন করা, সেটাই এখন প্রশ্ন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ