1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২০১৪: আফগানিস্তানের জন্য ভীষণ দুশ্চিন্তার বছর

গাব্রিয়েল ডমিনগেজ/এসিবি২১ নভেম্বর ২০১৪

সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুযায়ী আফগানিস্তানে শতকরা ৪০ ভাগ মানুষ মনে করেন যে, তাঁদের দেশ এখন ভুল পথে এগোচ্ছে৷ আফগানদের এমন নৈরাশ্যবাদী হওয়ার কারণ এবং এ বিষয়ে সরকারের করণীয় সম্পর্কে বলেছেন বিশ্লেষক স্কট স্মিথ৷

ছবি: DW/M. Thörner

গত ১৮ই নভেম্বর ‘দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন'-এ প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে, আফগানিস্তানের ৫৪ দশমিক ৭ ভাগ মানুষ মনে করে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি এখন ঠিক পথেই এগোচ্ছে৷ তবে নিজের দেশ সম্পর্কে আশাবাদী লোকের সংখ্যা কমেছে৷ এক বছর আগে দেশব্যাপী চালানো জরিপে যেখানে ৫৭ দশমিক ২ ভাগ মানুষ আশার ইঙ্গিত দেখেছিল, এবার তা কমে হয়েছে ৫৪ দশমিক ৭ ভাগ৷ অন্যদিকে জনমনে হতাশা, নৈরাশ্য বেড়েছে৷ আগের বছর এর হার ছিল ৩৭ দশমিক ৯ ভাগ, এবার তা বেড়ে হয়েছে ৪০ দশমিক ৪৷

ডয়চে ভেলে: আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, আফগানদের মাঝে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নৈরাশ্য বাড়ছে৷ কেন এমন হচ্ছে?

স্কট স্মিথ: আফগানদের জন্য ২০১৪ সালটা খুবই দুশ্চিন্তার বছর৷ এ বছর বড় দুটো ঘটনা ঘটেছে৷ প্রথমটি আফগানিস্তান থেকে আন্তর্জাতিক বাহিনী প্রত্যাহার৷ সমালোচনা থাকলেও এ বাহিনী এতদিন আফগানিস্তানের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে৷ দ্বিতীয়টি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন৷ সেখানে ২০০১ সাল থেকে যিনি ছিলেন ‘আফগানিস্তানের মুখ' সেই হামিদ কারজাইকে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখা হয়েছে৷ আফগানরা জানে, তাদের দেশে শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক পালাবদল কখনো সম্ভব হয়নি৷ হামিদ কারজাই কোনো-না-কোনো উপায়ে ক্ষমতায় থেকে যেতে পারেন – এ আশঙ্কা ছিল৷ এছাড়া ব্যাপক সহিংসতার কারণে নির্বাচন বানচাল হতে পারে এমন আশঙ্কা তো ছিলই৷ আপনি যে জরিপটির কথা বলছেন, সেটা হয়েছিল গত জুনে৷ তখনো আশরাফ গনি আর আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ-র মধ্যে নির্বাচনি লড়াই চলছে৷ জনমনে শঙ্কা এবং হতাশা জন্ম দেয়ার পেছনে এ সবের বড় ভূমিকা ছিল৷ জরিপে তারই প্রভাব পড়েছে৷

ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অফ পিস (ইউএসআইপি)-এর পরিচালক স্কট স্মিথছবি: USIP

জরিপে কিছু মজার বিষয়ও বেরিয়ে এসেছে৷ আফগানিস্তানের পূর্ব এবং দক্ষিণাঞ্চলের মানুষরা বলেছেন, তাঁরা মনে করেন, আগের বছরগুলোর চেয়ে এখন ঠিক পথে যাচ্ছে দেশ৷ সত্যি বলতে কি, আশাবাদী এবং নৈরাশ্যবাদী মনোভাব অঞ্চলভেদে বেড়েছে, কমেছে৷ শহর এবং গ্রাম, নারী এবং পুরুষের মাঝেও দৃষ্টিভঙ্গির তারতম্য লক্ষ্য করা গেছে৷

আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী (এএনএসএফ)-এর এখন কী অবস্থা? তালেবানকে মোকাবেলা করার সামর্থ্যই বা কেমন তাদের?

আফগানিস্তানের নিরাপত্তার দায়িত্ব গত বছরের জুনেই (এএনএসএফ)-এর ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছিল৷ সুতরাং দু'মৌসুম ধরে (তালেবান বিরোধী) যুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা৷ তাদের জন্য ২০১৪ সালের গ্রীষ্মকালটা ছিল কঠিন এক চ্যালেঞ্জের, কেননা, তখন সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলার পাশাপাশি তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানকেও সম্ভব করতে হয়েছে৷ বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আফগান বাহিনী খুব ভালো কাজ করেছে৷ তবে সফল হতে গিয়ে চড়া মূল্যও দিতে হয়েছে৷ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে অনেক৷ ক্ষতির হার এক রেখে তারা আগামী বছর আরেকটি যুদ্ধের মৌসুম পার করতে পারবে কিনা তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না৷

যুক্তরাষ্ট্র যে আফগানিস্তানে তাদের সৈন্য সংখ্যা এক লাখ থেকে কমিয়ে এ বছরের মধ্যে ৯ হাজার ৮০০-তে নিয়ে আসা এবং ২০১৬ সালের মধ্যে সব সৈন্য ফিরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে- এ বিষয়টি আফগান বাহিনীতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে৷ এর ফলে তাদের মনোবল কমতে পারে৷

নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আশরাফ গনির শুরুটা কেমন হয়েছে?

তাঁর পারফরম্যান্সকে ভালো মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে৷ প্রথম দু'মাস তো তিনি সংস্কারের দিকেই মন দিয়েছেন৷ তাঁর প্রথম বড় কাজ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তি (বিএসএ) সাক্ষর করা৷ হামিদ কারজাই নিজেই এ চুক্তি সাক্ষরে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন৷ এই চুক্তির ফলে শুধু যে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো বাহিনী প্রয়োজনে আফগানিস্তানে থাকতে পারবে – তা-ই নয়, এর ফলে আফগান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের মাঝ থেকে বড় একটা কাঁটাও দূর হলো৷ এছাড়া গনি ২০১০ সালের কাবুল ব্যাংক কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু করেছেন৷ সেই ঘটনায় ১ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল৷ দাতা দেশগুলোর আফগানিস্তানের ওপর আস্থা কমে গিয়েছিল৷ তদন্ত শুরু করে গনি সেই আস্থা পুনরুদ্দারের চেষ্টা করছেন৷

স্কট স্মিথ, ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অফ পিস (ইউএসআইপি)-এর পরিচালক৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ