মঙ্গলবার বিকেলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার জন্য কাগজ জমা দিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্প লড়বেন কি না, তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা কল্পনা চলছিল। ট্রাম্প এবিষয়ে কখনোই মুখ খোলেননি। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি নির্বাচনে লড়ার জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবারই এবিষয়ে প্রথম মুখ খুলেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের যেসব দিকে নজর সবার
গত কয়েকমাসে প্রতিনিধি বাছাই, নির্বাচনি প্রচারণা এবং তহবিল সংগ্রহের নানা উদ্যোগ দেখা গেছে মার্কিন মুল্লুকে৷ এবার মধ্যবর্তী নির্বাচন ওয়াশিংটনে ক্ষমতার ভারসাম্য ঠিক করে দেবে৷ নির্বাচনে গুরুত্ব পাচ্ছে নানা কিছু৷ চলুন দেখি৷
ছবি: picture-alliance/J. Schwenkenbecher
মধ্যবর্তী নির্বাচন মঙ্গলবার
২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন মূলত অনুষ্ঠিত হচ্ছে মঙ্গলবার৷ এই নির্বাচনে রিপাবলিকানরা ব্যাপক সমর্থন পাওয়ার আশা করছেন৷ অন্যদিকে, কংগ্রেসে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ডেমোক্রেটরা নিজেদের অবস্থান ধরে রাখা নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছে৷ অর্থনীতির দুরবস্থা, অপরাধ, প্রেসিডেন্টের কারিশমা, গর্ভপাত আইনের মতো বিষয়াদি এই নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে পারে৷
ছবি: Brandon Bell/REUTERS
লালদের জনপ্রিয়তা কি বাড়ছে?
মঙ্গলবারের নির্বাচনে রিপাবলিকানদের পক্ষে সমর্থন বাড়বে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ কিন্তু সেটার বিস্তৃতি কতটা হবে তা এক্ষুণি বলা মুশকিল৷ মুদ্রাস্ফীতি এবং রাজনৈতিক বিভাজন বাড়ায় ভোটারদের মধ্যে দেশের ভবিষ্যত নিয়ে হতাশা কাজ করছে৷ আর ইতিহাস বলছে ভোটাররা সাধারণত ক্ষমতাসীনদের উপরেই তাদের হতাশার দায় চাপায়৷
ছবি: Eva Marie Uzcategui/AFP/Getty Images
ডেমোক্রেটদের আশা গর্ভপাত আইন
ডেমোক্রেটরা আশা করেছিলেন যে গর্ভপাতের অধিকার বাতিল সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায় মধ্যবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের জনপ্রিয়তা হারানোর ঐতিহাসিক ধারায় বিঘ্ন ঘটাবে বা ক্ষতি কমাবে৷ কিন্তু নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়েছে দলটির নেতাদের মধ্যে এই আশা ততটাই কমেছে বলে মনে হয়েছে৷ রিপাবলিকান দলে গর্ভপাতবিরোধী যারা আছেন তাদের ভোট কমতে পারে৷
ছবি: Getty Images/E. Nouvelage
কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে রিপাবলিকানরা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্যবর্তী নির্বাচনে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হতে পারে৷ এজন্য দলটির আরো পাঁচটি আসন প্রয়োজন৷ হয়ত এরচেয়ে বেশি আসনও পেয়ে যেতে পারে দলটি৷ আর এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে ডেমোক্রেটদের কিছু এলাকায় বেশ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন রিপাবলিকানরা৷
ছবি: Mandel Ngan/AFP
সিনেট জয় আরো সহজ
মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ডেমোক্রেটদের অবস্থা আরো নাজুক৷ রিপাবলিকানরা আরেকটি আসন পেলেই উচ্চকক্ষ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Schwenkenbecher
ল্যাটিনো ভোটাররা কি আরো ডানে সরবে?
২০২০ সালের নির্বাচনে ল্যাটিনোদের সমর্থন খুব একটা পায়নি ডেমোক্রেটরা৷ কিন্তু এবার সেই পরিস্থিতি বদলাবে এমন আশাও করা যাচ্ছে না৷ কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মেক্সিকো-মার্কিন সীমান্ত সমস্যার তেমন কোনো সমাধান দিতে পারেননি৷ অন্যদিকে, এই গোষ্ঠীর মধ্যে রিপাবলিকানদের প্রতি সমর্থন বেড়ে চলেছে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এখনো রিপাবলিকান পার্টিতে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন৷ যদিও তিনি মধ্যবর্তী নির্বাচনের ব্যালটে নেই, তার সমর্থন পাওয়া বেশ কয়েকজন প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন৷ এই প্রার্থীরা যদি ভালো না করেন তাহলে ২০২৪ সালে আবারও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের লড়াই করার সম্ভাবনা প্রশ্নবিদ্ধ হবে৷
ছবি: Kyle Mazza/AA/picture alliance
২০২৪ এর নির্বাচনের রূপরেখা
মার্কিন এই মধ্যবর্তী নির্বাচন কার্যত ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলগুলোর অবস্থান কী হতে যাচ্ছে তা ঠিক করে দেবে৷ রিপাবলিকানরা বড় জয় পেলে ট্রাম্পের আবারো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের পথ তৈরি হতে পারে, অন্যদিকে ডেমোক্রেটদের দুর্বল ফলাফল বাইডেনের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে টিকে থাকার লড়াই কঠিন করে দেবে৷
ছবি: Saul Loeb/AFP
8 ছবি1 | 8
ফ্লোরিডায় কাগজ জমা দিয়ে সমর্থকদের মুখোমুখি হয়েছিল ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেছেন, ''আজ থেকে লড়াই শুরু হলো। অ্যামেরিকাকে ফের পুরনো গৌরবে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এখন প্রথম কর্তব্য হলো, অ্যামেরিকাকে বামপন্থি ডেমোক্র্যাটদের হাত থেকে রক্ষা করা।'' ট্রাম্প দাবি করেছেন, ২০২০ সালে অর্থনৈতিক মন্দা হয়েছিল। কিন্তু রেকর্ড সময়ে তিনি সেই মন্দা থেকে দেশকে উদ্ধার করেছিলেন। মন্দার সময়ে তিনি মানুষের হাতে অর্থ পৌঁছে দিয়েছিলেন। তার দাবি, চলতি সময়ে অর্থনৈতিক মন্দা সামলাতে পারছেন না বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ট্রাম্পের টুইটার নিষেধাজ্ঞা তুলে দেবেন মাস্ক
01:11
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি নিয়ে নানা মহলে নানা অভিমত আছে। ট্রাম্প সমর্থকেরা এই দাবি মেনে নিলেও, ট্রাম্পবিরোধীদের বক্তব্য, ট্রাম্পের কথার কোনো যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা নেই। দেশকে কখনোই অর্থনৈতিক মন্দার হাত থেকে ট্রাম্প রক্ষা করতে পারেননি। বরং অর্থনীতির হাল আরো বেহাল হয়েছিল তার সময়ে।
ট্রাম্প এদিন তার সমর্থকদের জানিয়েছেন, ২০২৪ সাল পর্যন্ত অভূতপূর্ব প্রচারের পরিকল্পনা করেছেন তিনি। এমন প্রচার অ্যামেরিকা আগে কখনো দেখেনি। বস্তুত, সম্প্রতি ফ্লোরিডার গভর্নরের জন্য একাধিকবার প্রচার করেছেন ট্রাম্প। তিনিও রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট ভোটে অংশ নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে তার সঙ্গে ট্রাম্পের কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
মধ্যবর্তী নির্বাচনে অনেকেই ভেবেছিলেন রিপাবলিকানরা অত্যন্ত ভালো ফল করবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। যদিও রিপাবলিকানদের জন্য প্রচারে নেমেছিলেন ট্রাম্প। রিপাবলিকানদের একটি অংশের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা এখনো অটুট থাকলেও, একটি অংশ মনে করে, ট্রাম্পের জন্যই রিপাবলিকানদের এই বিপর্যয়। যদিও এদিন ট্রাম্প নির্বাচনে প্রার্থী হবেন, একথা ঘোষণা করার পর তার সমর্থকদের মধ্যে সাড়া পড়ে গেছে।