ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন(আইওএ) আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠিয়ে ২০৩৬ সালের অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকের আয়োজন করতে চেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক অ্যাসোয়িশনের(আইওসি) ফিউচার হোস্ট কমিশনের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দাবি জানাতে হয়। আইওএ সেটাই করেছে। গত ১ অক্টোবর এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানেই ২০৩৬ সালের অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক আয়োজনের দাবি জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও কিছুদিন আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে ভারত অলিম্পিকের আয়োজন করতে চায়। সরকার ও আইওএ-র আশা, ভারত এই দায়িত্ব পেলে দেশের আর্থিক, খেলাধুলা, যুবদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বিপুল প্রভাব পড়বে। ভারতের সামনে একটা বিশাল সুযোগ এসে যাবে।
গত স্বাধীনতা দিবসের সময় প্যারিস অলিম্পিকে যোগ দেয়া ভারতীয় অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকের দলের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, ২০৩৬ সালে ভারত অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকের আয়োজন করতে চায়। তার প্রস্তুতি নিয়েও তিনি ক্রীড়াবিদদের প্রস্তাব দিতে বলেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ''যারা আগের অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের ইনপুট খুবই জরুরি। আপনারা নিশ্চয়ই অনেক কিছু দেখেছেন, অনুভব করেছেন। আমরা সেগুলি নথিবদ্ধ করতে চাই। তাই আপনারা আপনাদের অভিজ্ঞতার কথা সরকারকে জানান। আমরা ছোটখাট সব সিদ্ধান্তের কথা জানতে চাই।''
গতবছর মুম্বইতে আওসির অধিবেশনেও মোদী বলেছিলেন, ১৪০ কোটি ভারতীয় ২০৩৬ সালের অলিম্পিক আয়োজনের জন্য দায়বদ্ধ।
প্যারিসে রূপকথা তৈরি করছেন লাইলস, বাইলস, জুলিয়েনরা
প্রায় প্রতিদিনই অসাধারণ সাফল্য দেখছে প্যারিস অলিম্পিক। জন্ম হচ্ছে খেলার জগতে রূপকথার নায়ক-নায়িকাদের।
ছবি: Anadolu/picture alliance
দ্রুততম পুরুষ নোয়া লাইলস
প্যারিস অলিম্পিকে পুরুষদের একশ মিটার দৌড়ে জিতে বিশ্বের দ্রুততম পুরুষ হলেন যুক্তরাষ্ট্রের নোয়া লাইলস। সময় নিলেন নয় দশমিক ৭৯ সেকেন্ড। ফটো ফিনিশে জিতলেন তিনি। ২০০৪ সালের পর আবার যুক্তরাষ্ট্রের একজন অ্যাথলিট পুরুষদের একশ মিটার দৌড় জিতলেন। ২০০৮ থেকে ১৬ পর্যন্ত জিতেছেন জ্যামাইকার উসাইন বোল্টের। অবশ্য বোল্টের রেকর্ড ভাঙতে পারেননি লাইলস।
ছবি: Phil Noble/REUTERS
এমন দৌড় আর হয়নি
একশ মিটারে লাইলস সোনা পেয়েছেন ফটো ফিনিশে। রুপোজয়ী কিশানে থমসনের সময়ও ছিল নয় দশমিক ৭৯। এরপর এক সেকেন্ডকে এক হাজার ভাগ করা হয়। সেখানেই দশমিক শূন্য শূন্য পাঁচ সেকেন্ড আগে দৌড় শেষ করায় লাইলস সোনা জেতেন। আটজন প্রতিযোগীই দৌড় শেষ করেন ১০ সেকেন্ডের কম সময়ে। তাই এই দৌড়কে বিশ্বের অন্যতম সেরা একশ মিটারের দৌড় বলা হচ্ছে।
ছবি: Fabrizio Bensch/REUTERS
জিতে কী বললেন লাইলস
লাইলস বলেছেন, ''আমার জন্য এর থেকে বড় মুহূর্ত আর কিছু হতে পারে না। আমি প্রথম রাউন্ডে ভালো করতে পারিনি। তাই ফাইনালে আরো আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে এসেছিলাম। আমি সেভাবেই দৌড়েছি। আমার মনে হয়, আপনাদের আমাকে পছন্দ হয়েছে। আমাকে আরো অনেক দূর যেতে হবে।''
ছবি: Kai Pfaffenbach/REUTERS
বিশ্বের দ্রুততম নারী
প্যারিস অলিম্পিকে দ্রুততম নারী হয়েছেন সেন্ট লুসিয়ার জুলিয়েন অ্যালফ্রেড। ১০ দশমিক ৭২ সেকেন্ডে তিনি একশ মিটার দৌড়েছেন এবং সোনা জিতেছেন। এই দৌড় তাকে অষ্টম দ্রুততম নারীর পরিচিতি দিয়েছে। তবে শুধু এই কারণে নয়, তিনি অলিম্পিক-রূপকথায় নাম তুলে ফেলেছেন, ক্যারিবিয়ানের ছোট দ্বীপ সেন্ট লুসিয়াকে প্রথম অলিম্পিক পদক এনে দিয়ে।
ছবি: Dylan Martinez/REUTERS
সেন্ট লুসিয়ার জুলিয়েন
সেন্ট লুসিয়ার জনসংখ্যা হলো এক লাখ ৮০ হাজার। সেখান থেকে কেউ এর আগে অলিম্পিক পদক জেতেননি। জুলিয়েন জিতলেন। ১২ বছর বয়সে বাবাকে হারানোর দুই বছর পর জ্যামাইকায় চলে যান। তারপর তার দৌড়বিদ হিসাবে প্রশিক্ষণের শুরু। যুব অলিম্পিকে রুপো পাওয়ার পর টেক্সাসে ভর্তি হন। কোচ হিসাবে পান ফ্লোরিয়ালকে। বদলে যান জুলিয়ান।
ছবি: Kai Pfaffenbach/REUTERS
বাইলসের তিন সোনা
প্যারিসে আরেক রূপকথার জন্ম দিয়েছেন বাইলস। ভল্টে তৃতীয় সোনা জিতে নিয়ে। তিনটে সোনা জিতে শুধু নয়, বাইলসের রূপকথার প্রতিটি পরতে আছে এক অনন্য় লড়াই ও মানসিক শক্তির কাহিনি। টোকিওতে মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। এবার তিনিই তিনটি সোনা জিতে দেখিয়ে দিলেন, চেষ্টা করলে মানুষ সব যুদ্ধে জয় পেতে পারে। নিজেকে তুলে নিয়ে যেতে পারে এক অনন্য় উচ্চতায়।
ছবি: Anadolu/picture alliance
'টুইস্টিজ' আক্রান্ত বাইলস
টোকিওতে বাইলস মানসিক অসুখ টুইস্টিজে আক্রান্ত হন। এই অসুখে মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। অসুস্থ মানুষের সামনে শূন্যতা থাকে শুধু। বাইলস সেই অসুখ সারিয়ে প্যারিস অলিম্পিকে দিলেন ইয়ুরচেঙ্কো ডাবল পাইক ভল্ট যা এখন অনেকেই বাইলস ভল্ট বলছেন। শূন্যে ভেসে দুইবার পাক মেরে ঠিক করে ল্যান্ড করতে হয়। বাইলস করলেন। সোনা পেলেন। সবমিলিয়ে অলিম্পিকে ১০টি সোনা হয়ে গেলো তার।
ছবি: Kyodo/picture alliance
কী বললেন বাইলস?
জেতার পর সামাজিক মাধ্যমে বাইলস বলেছেন, ''অলিম্পিকে পদক জেতার পর আপনারা দয়া করে অ্যাথলিটদের এই প্রশ্ন করা বন্ধ করুন যে, এরপর কী? আমরা গোটা জীবন ধরে যে মুহূর্তটা পেতে চা্ইছি, তাকে উপভোগ করতে দিন।'' সাংবাদিক সম্মেলনে বাইলস বলেছেন, তিনি আর ইয়ুরচেঙ্কো ডাবল স্পাইক ভল্ট দেবেন না। তবে আগামী অলিম্পিক তার দেশে হবে। সেখানে নামবেন কিনা তা বলতে পারছেন না। তখন তার বয়স বেড়ে যাবে।
ছবি: Kyodo/picture alliance
কেঁদে ফেললেন জোকোভিচ
অলিম্পিক টেনিসে সোনা জিতে কেঁদে ফেললেন জোকোভিচ। ফাইনালে অলকারাজকে ৭-৬, ৭-৬-এর হারিয়ে সোনা জেতার পর এই কান্না জোকোভিচের। ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা জোকোভিচের চোখে জল দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। জোকোভিচ বলেছেন, ''৩৭ বছর বয়সে সার্বিয়ার হলে সোনা জেতা অসাধারণ অনুভূতি। আবেগ ধরে রাখতে পারছি না। আমি গর্বিত ও খুশি। এটাই আমার সেরা সাফল্য।''
ছবি: Manu Fernandez/AP/picture alliance
৫২ বছর পর
প্যারিস অলিম্পিকে হকিতে রূপকথা-সম জয় পেয়েছে ভারত। ৫২ বছর পর তারা হারাতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়াকে। ৩-২ গোলে। ভারতীয় হকি দল এবার অলিম্পিকে ভালো খেলছে। ব্রিটেনকে হারিয়ে সেমিফাইনালেও উঠেছে তারা। একটিমাত্র ম্যাচ হেরেছে তারা বেলজিয়ামের কাছে। সেখানেও তারা ভালো খেলেছে। তবে ৫২ বছর পর অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর ঘটনা আলোড়ন তুলেছে ভারতে।
ছবি: Adnan Abidi/REUTERS
10 ছবি1 | 10
কোন কোন দেশ করতে চায়?
২০২৩ সালের অলিম্পিকের জন্য ১০টি দেশ উৎসাহ দেখিয়েছে। এই দেশগুলির মধ্যে আছে দক্ষিণ কোরিয়া(সিওল), মিশর(নতুন প্রশাসনিক রাজধানী), তুরস্ক(ইস্তাম্বুল), পোল্যান্ড(ওয়ারশ, ক্র্যাকাও), মেক্সিকো(মেক্সিকো সিটি-সহ আরো কিছু শহরে), ইন্দোনেশিয়া(নুসানতারা) এবং ভারত(আহমেদাবাদ)।
আইওসি-র প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, অলিম্পিকের আয়োজন করার জন্য ভারতের দাবি যথেষ্ট শক্তিশালী।
কোথায় শেষপর্যন্ত অলিম্পিক হবে, তা ঠিক করে আইওসি-র ফিউচার হোস্ট সিলেকশন কমিশন। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা একটা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। তারা দেখে কোন দেশ সবচেয়ে ভালোভাবে অলিম্পিকের আয়োজন করতে পারবে।
চারটি ধাপ আছে
কোন দেশে অলিম্পিক হবে, তা ঠিক করার চারটি ধাপ আছে।
প্রথমে ফিউচার হোস্ট কমিশন যে দেশ আগ্রহ দেখিয়েছে, তাদের সঙ্গে ইনফরমাল কথাবার্তা বলে। সেই আলোচনা ইতিবাচক হলে আইওসি-র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশের অলিম্পিক কমিটির সমানে কথাবার্তা হতে থাকে। সেখানে সামগ্রিক পরিকল্পনা তৈরি থেকে, কে কীভাবে এর থেকে লাভবান হবে-সহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়। এই আলোচনা খোলাখুলি হয়। তখন কোনো আর্থিক দায়বদ্ধতা নিয়ে কথা হয় না। এরপর ফিউচার হোস্ট কমিশন তৃতীয় কোনো পক্ষের থেকে সেই দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট নেয়।
গ্রিসে জ্বললো প্যারিস অলিম্পিকের মশাল
শুরু থেকে চলে আসা নিয়ম মেনে ১৭ এপ্রিল অলিম্পিকের জন্মভূমি গ্রিসে জ্বালানো হয়েছে অলিম্পিক মশাল৷গ্রিস প্রদক্ষিণ করে মশাল যাবে ২০২৪ অলিম্পিকের আয়োজক দেশ ফ্রান্সে৷ ছবিঘরে অলিম্পিক মশাল প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানের বিস্তারিত...
ছবি: Angelos Tzortzinis/AFP
জ্বলে ওঠার আগে
গ্রীসের অলিম্পিয়ায় আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে অলিম্পিক মশাল এবং মশাল জ্বালানোর কলড্রন বা কড়াই৷
ছবি: Alkis Konstantinidis/REUTERS
যার হাতে জ্বললো মশাল
প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী এবারও গ্রিসের অলিম্পিয়ায় মশাল জ্বালানোর অনুষ্ঠানে পুরোহিতের ভূমিকা পালন করেন একজন নারী৷ এবার এ ভূমিকায় ছিলেন গ্রিসের অভিনেত্রী ম্যারি মিনা৷ছবিতে আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে অলিম্পিক শিখা হাতে ম্যারি মিনা৷
ছবি: Alkis Konstantinidis/REUTERS
১০০ দিন আগে...
২০২৪ অলিম্পিক শুরু হবে ২৬ জুলাই৷ বরাবরের মতো এবারও আসর শুরুর ঠিক ১০০ দিন আগে অলিম্পিয়ায় জ্বালানো হলো মশাল৷ ছবিতে অনুষ্ঠানের অন্য পারফর্মারদের সঙ্গে পুরোহিতের ভূমিকা পালন করা ম্যারি মিনা (প্রথম সারির ডান দিকে)৷
ছবি: Alkis Konstantinidis/REUTERS
নৃত্যানুষ্ঠান
মশাল জ্বালানোর অনুষ্ঠানে ম্যারি মিনা এবং সহশিল্পীদের দৃষ্টিনন্দন নাচ৷
ছবি: Angelos Tzortzinis/AFP
সেই মুহূর্ত
অলিম্পিয়ায় মশাল জ্বালালেন ম্যারি মিনা৷এই মুহূর্তটির পরই আসলে শুরু হয়ে যায় অলিম্পিক গেমসের কাউন্টডাউন৷ এবারও তাই হয়েছে৷ শুরু হয়ে গেছে ১০০, ৯৯... এভাবে ২৬ জুলাইয়ের আগমনের ক্ষণ গণনা৷
ছবি: Alkis Konstantinidis/REUTERS
এ আলো ছড়িয়ে যাবে...
অলিম্পিয়ায় অলিম্পিক মশালের হাতবদল৷ গ্রিসের রোয়ার স্তেফানোস ন্তোউসকসের হাতে মশাল তুলে দিচ্ছেন ম্যারি মিনা৷
ছবি: Louisa Gouliamaki/REUTERS
গ্রিস থেকে মশাল যাবে ফ্রান্সে
আগামী ২৬ এপ্রিল অলিম্পিক ২০২৪-এর আয়োজক ফ্রান্স অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেয়া হবে মশাল৷ তার আগে টানা ১১ দিন গ্রিসে ঘুরে বেড়াবে অলিম্পিকের এই শিখা৷ ছবিতে মশাল জ্বালানোর অনুষ্ঠানে নৃত্যানুষ্ঠানের এক মুহূর্ত৷
ছবি: Louisa Gouliamaki/REUTERS
১১ দিনে ৫০০ কিলোমিটার
১৭ এপ্রিল অলিম্পিয়ায় ম্যারি মিনার কাছ থেকে মশাল গ্রহণ করার পর ছুটে যাচ্ছেন স্তেফানোস ন্তোউসকস৷ তার হাত থেকে মশাল যাবে দ্বিতীয় জনের কাছে৷ এভাবে নানা জনের হাত ঘুরে ঘুরে ১১ দিনে গ্রিসের ৫০০ কিলোমিটার পথ পরিভ্রমণ করবে অলিম্পিক মশাল৷
ছবি: Louisa Gouliamaki/REUTERS
8 ছবি1 | 8
এই কথা ও সমীক্ষা ইতিবাচক হলে শুরু হয় তৃতীয় পর্যায়। সেখানে আরো গভীরভাবে সবকিছু পর্যালোচনা করা হয়। প্রতিটি ইচ্ছুক দেশকে প্রশ্নমালা পাঠানো হয়। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু গ্যারান্টি চাওয়া হয়। তারপর নির্দিষ্ট স্তরে কথাবার্তা শুরু হয়। দরকার হলে একাধিক দেশকে আইওসি-র অধিবেশনে ডাকা হয়।
তারপর চতুর্থ পর্বে কিছু দেশকে বেছে নেয়া হয়। তারা তাদের চূড়ান্ত প্রেজেন্টেশন দেয়। এরপর আইওসি দেশগুলি গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে আয়োজক দেশকে বেছে নেয়। প্রতিটি সক্রিয় সদস্য দেশের একটি করে ভোট আছে।