টানা দুই মেয়াদ দায়িত্ব পালনের পর সংবিধান অনুযায়ী ২০০৮ সালে তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হওয়া সম্ভব ছিল না পুটিনের৷ তাই দিমিত্রি মেদভেদেভকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সমর্থন দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন৷ এরপর ২০১২ সালে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন পুটিন৷ ২০১৮ সালে পুননির্বাচিত হওয়ায় তার মেয়াদ ছিল ২০২৪ সাল পর্যন্ত৷

সম্প্রতি গণভোটের মধ্য দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন এনেছে রাশিয়া, যার মধ্য দিয়ে টানা তিন মেয়াদসহ মোট পাঁচ দফা রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে পুটিনকে৷ অর্থাৎ, আরো ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন তিনি৷ ভোটে সংবিধান পরিবর্তনের পক্ষে রায় মিললেও অনেকেই তা মেনে নিতে পারছেন না৷ পুটিনের ক্ষমতা ছাড়ার দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন তারা৷

স্বাভাবিক সময়ে মস্কোতে একজনের বেশি মানুষ কোনো প্রতিবাদে অংশ নিলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়৷ কোভিড-১৯ এর কারণে এখন সেখানে যে-কোনো গণজমায়েতই নিষিদ্ধ৷ এই নিষেধাজ্ঞা অম্যান্য করেই জড়ো হয়েছেন প্রতিবাদকারীরা৷

বুধবার প্রায় ৫০০ বিক্ষোভাকারীরা মস্কোয় কবি আলেক্সান্ডার পুসকিনের ভাস্কর্যের নিচে জড়ো হন৷ তারা সংবিধান পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আর পুটিনের পদত্যাগের দাবি জানান৷

এই আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন সমকামীরা৷ ছবিতে একজনকে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে৷ তাতে লেখা, ‘‘যেই কর্তৃপক্ষ আমাকে পরিবার গড়তে দিচ্ছে না, আমি তাদের সমর্থন করি না৷’’

বুধবার মস্কোর বিক্ষোভ থেকে অনেককে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ ছবিতে এক প্রতিবাদকারীকে আটকের পর প্রিজন ভ্যানে তুলতে দেখা যাচ্ছে৷

বুধবারের বিক্ষোভ থেকে ১৪০ জনেরও বেশি মানুষকে উপরে আটক করা হয়েছে বলে দাবি ওভিডি ইনফো গ্রুপ-এর৷ এমনকি সাংবাদিকদেরও পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়েছে৷ নিজেদের প্রতিনিধি আটক হওয়ার তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷ তবে পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়৷

প্রতিবাদকারীদের বেশিরভাগের মুখেই মাস্ক ছিল৷ তবে সেটিকেও স্লোগানের জন্য ব্যবহার করেছেন তারা৷ পুটিনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশে রাশিয়ান ভাষায় লেখা হয়েছে ‘না’৷

গণভোটে ‘হ্যাঁ’-র পক্ষে বেশি ভোট পড়লেও এই নারী তার চোখের নীচে আঁকা ‘না’ ঘরে টিক চিহ্ন দিয়েছেন৷ তিনি সংবিধান পরিবর্তন চান না৷

শুধু মস্কো নয়, অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ হয়েছে৷ এই ছবিটটি সেইন্ট পিটার্সবার্গের৷ সমাবেশে এক তরুণী পুটিনের ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার ব্যবস্থার নিন্দা জানান৷