পরিবেশ বাঁচাতে নতুন জলবায়ু বিলের পক্ষে রায় দিলেন সুইজারল্যান্ডের সাধারণ মানুষ।
বিজ্ঞাপন
এই বিলে ২০৫০ সালের মধ্যে সুইজারল্যান্ডে পেট্রোল-ডিজেলের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্য করার কথা বলা হয়েছে। সেই সময় পুরোপুরি পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির উপর নির্ভরশীল হবে এই দেশ।
উষ্ণায়নের ফলে সুইজারল্যান্ডে আল্পস হিমবাহের বরফ গলছে। পরিবেশগত বিপর্যয়ের সামনে থাকা এই দেশটি প্রস্তাবিত বিল নিয়ে গণভোটের আয়োজন করে। ৫৯ দশমিক এক শতাংশ মানুষ বিলের পক্ষে রায় দিয়েছেন। দক্ষিণপন্থি সুইস পিপলস পার্টি ছাড়া বাকি সব রাজনৈতিক দল বিলের পক্ষে।
সুইজারল্যান্ডে তেল ও গ্যাসের প্রায় পুরোটাই আমদানি করতে হয়। যার অনেকটাই আসে রাশিয়া থেকে। বিলে বলা হয়েছে, তেল ও গ্যাসের বদলে বিকল্প শক্তির পথে হাঁটবে সুইজারল্যান্ড। সেজন্য আগামী এক দশকে দুইশ কোটি সুইস ফ্রাঁ খরচ করা হবে। পুরোপুরি গ্রিন এনার্জির দিকে ঝুঁকবে সুইজারল্যান্ড।
সুইজারল্যান্ড কেনো যাবেন?
সুইজারল্যান্ডের বিশেষত্ব কী? এর বিশেষত্ব এক কথায় বলে শেষ করা যাবে না৷ হাইডি থেকে আল্পস, চকলেট থেকে টানেল একনজরে দেশটির বিশেষত্ব জেনে নিন৷
ছবি: picture alliance/Prisma/C. Sonderegger
পাহাড়ের ডাক
আল্পস ঘেরা সুইজারল্যান্ডের যেদিকে তাকানো যায়, মনে হয় যেনো পোস্টকার্ডে আঁকা ছবি৷ গরুদের চারণভূমিগুলো ভীষণ সুন্দর৷ হাইকারদের জন্য স্বর্গ হিসেবে পরিচিত সুইজারল্যান্ডে ঘুরতে গেলে ইয়ুংফ্রাও, মোনশ বা আইগের চূঁড়া দেখতে যাওয়া উচিত৷ আর আছে ‘ম্যাটারহর্ন’: উচ্চতা ৪ হাজার ৪৭৮ মিটার, বিশ্বে যে পাহাড়ের ছবি সবচেয়ে বেশিবার তোলা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/Flowerphotos/M. Peuckert
সুউচ্চ এবং দ্রুতগামী
ছোট্ট এই দেশটিতে ১৮শ’রও বেশি রেললাইন রয়েছে৷ সবচেয়ে বিখ্যাত হল সেরমাট থেকে সেন্ট মরিৎসগামী গ্ল্যাসিয়ার এক্সপ্রেস৷ বিশ্বের অন্যতম সুন্দর রেলপথ এটি৷ ২০০৮ থেকে এটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে৷
ছবি: swiss-image.ch/Jeroen Seyffer
গরু এবং গরুর ঘণ্টা
‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ ছবিটির কারণে সুইজারল্যান্ডের এই গরুর ঘণ্টা ভারতীয় উপমহাদেশে এখন সুপরিচিত৷ এই দেশে সুন্দর গরুর প্রতিযোগিতা, গরুর দৌড় প্রতিযোগিতাসহ গরুকে ঘিরে নানা আয়োজন হয়ে থাকে এবং গরুকে কোনো রকম আঘাত করা যাবে না৷
ছবি: picture-alliance/H. Lade Fotoagentur GmbH
পনীরের দেশ
সুইজারল্যান্ডকে পনীরের দেশ বলা যেতে পারে৷ বছরে সেখানকার মানুষ ২০ হাজার টন চিজ বা পনীর খায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Keystone/P. Klaunzer
আলপাইন সাউন্ডস
আল্পহর্ন এখন সুইজারল্যান্ডের জাতীয় প্রতীক হিসেবে বিবেচিত৷ কাঠের তৈরি এই বাঁশি থেকে যে শব্দ বের হয় তা ১০ কিলোমিটার দূর থেকে শোনা যায়৷ বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা আল্পহর্ন এর দৈর্ঘ্য ৪৭ মিটার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Pinauda
বন্ধুত্বপূর্ণ এবং ভালো প্রকৃতির কুকুর
আল্পসের সবচেয়ে সুপরিচচিত কুকুর হল সেন্ট বার্নার্ডস৷ এদের মধ্যে ব্যারি নামের একটু কুকুর তারকা খ্যাতি পেয়েছে৷ ১৮১৪ সালে মৃত্যুর আগে কুকুরটি অন্তত ৩০ জনের জীবন বাঁচিয়েছে৷ বার্নের ন্যাচরাল হিস্ট্রি জাদুঘরে গেলে ব্যারিকে দেখতে পারবেন আপনি৷
ছবি: iriskuerschner.com
হাইডির বিশ্ব
সুইজারল্যান্ডের এই মেয়েটির গল্প পুরো বিশ্বের কাছে পরিচিত৷ মাইয়েনফেল্ড গ্রামের মেয়ে হাইডিকে নিয়ে উপন্যাসটি লিখেছিলেন ইয়োহানা স্পিরি, যা এখন পর্যন্ত ৫ কোটি কপি বিক্রি হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images GmbH/De Meester, J.
চকলেট
সুইজারল্যান্ডের চকলেট পৃথিবী বিখ্যাত এর মিষ্টতা এবং মসৃণভাবের জন্য৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images/J. Kruse
সুইস আর্মি নাইফ
১৮৯৭ সালে প্রথম তৈরি হয় সুইস ছুড়ি৷ তখন এটি ছিল ‘অফিসার্স পকেট নাইফ’৷ আর এখন সুইজারল্যান্ডের সর্বত্র পাওয়া যায় এই চাকু৷ এমনকি গোলাপি রঙের এবং ইউএসবি স্টিকযুক্ত৷
১৮৯৭ সালে প্রথম তৈরি হয় সুইস ছুড়ি৷ তখন এটি ছিল ‘অফিসার্স পকেট নাইফ’৷ আর এখন সুইজারল্যান্ডের সর্বত্র পাওয়া যায় এই চাকু৷ এমনকি গোলাপি রঙের এবং ইউএসবি স্টিকযুক্ত৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Kembowski
টানেলের দেশ
সুইজারল্যান্ডে ১৩শ’রও বেশি টানেল রয়েছে৷ যেগুলো দিয়ে ডেনমার্ক থেকে সিসিলি অব্দি যাতায়াত করা যায়৷ গটহার্ড বেস টানেল ৫৭ কিলোমিটার লম্বা এবং বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলওয়ে টানেল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Flueeler
সুইজারল্যান্ড আছে অন্যখানেও
ঊনবিংশ শতাব্দীতে এসে সুইজারল্যান্ডের মত দৃশ্য আছে এমন জায়গাগুলোর নাম রাখা হয় দেশটির নামে৷ যেমন: জার্মানিতে সাক্সন সুইজারল্যান্ড (ছবিতে দেখা যাচ্ছে) এবং যুক্তরাষ্ট্রে লিটল সুইজারল্যান্ড৷ বর্তমানে বিশ্বের ২০০টিরও বেশি এলাকা আছে সুইজারল্যান্ডের নামে৷
ছবি: picture alliance/dpa/T. Eisenhuth
12 ছবি1 | 12
হিমবাহ বিশেষজ্ঞ ম্যাথিয়াস হাস টুইট করে বলেছেন, ''আমার ভালো লাগছে যে, মানুষ পরিবেশ বাঁচানোর পক্ষে রায় দিয়েছেন। পরিবেশবিজ্ঞানীদের কথা শুনেছে তারা।''
সোস্য়ালিস্ট পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য ভ্যালেরি ক্যালার্ড বলেছেন, ''ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।''
ভোদাতারা দ্বিতীয় গণভোটের সময় বহুজাতিক সংস্থার উপর ১৫ শতাংশ হারে পরিবেশ কর চাপানোর সিদ্ধান্তও সমর্থন করেছিলেন। ৭৯ শতাংশের বেশি ভোটদাতা এই পদক্ষেপের পক্ষে।