1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২৫ হাজার শ্রমিক চাকরিচ্যুত, ৪০ কারখানা বন্ধ

সমীর কুমার দে ঢাকা
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে এখন বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাত৷ গত সাত মাসে ২৫ হাজার গার্মেন্ট শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন৷ বন্ধ হয়ে গেছে অন্তত ৪০টি কারখানা৷

Bangladesch, Dhaka: Näher_innen protestieren für höhere Löhne
ফাইল ফটোছবি: Reuters/M. Possain

তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘আমরা আর পারছি না৷ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে৷ গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ২৫ হাজার শ্রমিককে বাদ দিয়ে বাধ্য হয়েছেন মালিকরা৷ এখন সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এ সেক্টরকে টিকিয়ে রাখা কঠিন৷''

গত বৃহস্পতিবারও রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নাসা মেইনল্যান্ড গার্মেন্টের শ্রমিকরা সড়কে নেমে বিক্ষোভ করেন৷ সেখানে বিনা নোর্টিসে দেড়শ শ্রমিককে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদ জানান তারা৷ গত ঈদুল আযাহার আগে একযোগে ২২টি গার্মেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ গত আগস্টে এসএফ ডেনিম অ্যাপারেলস লিমিটেড নামে তেজগাঁওয়ের আরেকটি কারখানার ৭০০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হলে সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে৷

এ পর্যন্ত ৪০টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন এই খাতের মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষই৷

তবে পরিস্থিতি এতটা খারাপ নয় বলে দাবি করেছেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘এটা নিয়ে এক ধরনের প্রোপাগান্ডা হচ্ছে, আমাদের রপ্তানি কি কমেছে, একটুও কমেনি৷ তাহলে সমস্যাটা কোথায়? আসলে বড় পুঁজির কাছে ছোট পুঁজির মালিকেরা মার খাচ্ছেন, ছোট কারখানাগুলো বন্ধ হচ্ছে৷ বড়দেরগুলো কিন্তু আরো বড় হচ্ছে৷ বিদেশে যে টাকা পাচার হচ্ছে এর মধ্যে গার্মেন্ট মালিকরাও আছেন৷ বিদেশে টাকা পাঠিয়ে এখন তারা বলছেন সব শেষ৷''

রুবানা হক

This browser does not support the audio element.

বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বর্তমানে আমরা যে পরিস্থিতি পার করছি, সেখানে শুধু বিজিএমইএর পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়, সবাইকে আন্তরিক হতে হবে৷ এমনকি শ্রমিকদেরও প্রতিষ্ঠানকে ভালোবাসতে হবে৷ কথায় কথায় আন্দোলন, ভাংচুর, প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলে হবে না৷ গার্মেন্টগুলো কমপ্লায়েন্স করতে গিয়ে মালিকরা হিমশিম খাচ্ছেন৷ আবার বায়াররাও দাম বাড়াচ্ছেন না৷ পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, চীনের সঙ্গে আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে৷ চীনের একজন শ্রমিক যে কাজ করেন, বাংলাদেশের তিনজন শ্রমিক সেই কাজ করেন, ফলে আমরা পিছিয়ে পড়ছি৷''

বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হকও বলছিলেন, ‘‘বায়ারদের উপর সমন্বিতভাবে চাপ দিতে হবে৷ তারা কমপ্লায়েন্সের কথা বলবেন, কিন্তু পোশাকের দাম বাড়াবেন না, তাহলে আমরা কিভাবে টিকে থাকব? কয়েকদিন আগে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল, তিনি বলছিলেন, সবাই মিলে চেষ্টা করলে বায়াররাও নিশ্চয় কথা শুনবেন৷ অক্টোবরে আমরা বাণিজ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি, সেখানে এইসব বিষয় নিয়ে কথা হবে৷''

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার আগে বিজিএমইএ'র সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান ছিল প্রায় পাঁচ হাজার৷ ওই দুর্ঘটনার কমপ্লায়েন্সের জন্য প্রায় দেড় হাজার কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে৷ বর্তমানে বিজিএমইএর সদস্য তিন হাজারের কিছু বেশি৷ এই সেক্টরে কাজ করেন ৪০ লাখ শ্রমিক৷ এর মধ্যে অধিকাংশই নারী শ্রমিক৷

জলি তালুকদার

This browser does not support the audio element.

গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কারখানা বন্ধ হওয়ার জন্য শুধু শ্রমিকদেরই দায়ি করা হচ্ছে৷ অথচ শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন প্রতিষ্ঠানকে৷ মালিকরা নিজেরা প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দাম কমিয়ে ফেলছেন৷ কেউ যদি ১০ ডলারে কোনো পোশাক বিক্রি করেন, সেখানে অন্য একজন মালিক গিয়ে বলছেন, আমি তো ৭/৮ ডলারে তোমাকে এটা দিতে পারি৷ ফলে বায়াররাও কম টাকায় কেনার জন্য প্রতিষ্ঠান বদলাচ্ছেন৷ কারণ এখন তো সব ফ্যাক্টরিই কমপ্লায়েন্স৷''

বাংলাদেশের শ্রমিকদের দক্ষতা চীন-ভিয়েতনামের চেয়েও বেশি বলে দাবি করেছেন জলি তালুকদার৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের শ্রমিকদের দক্ষতা কম থাকলে রপ্তানিও কমে যেত৷ ওইসব দেশের তুলনায় এখনও বাংলাদেশের শ্রমিকরা অনেক কম বেতন পান৷ পাশাপাশি কোন শ্রমিককে বেশিদিন একই প্রতিষ্ঠানে রাখেন না মালিকরা৷ কারণ তার প্রভিডেন্ট ফান্ড-গ্রাচুইটি বেশি হয়ে যায়৷ তাহলে আপনি দক্ষ শ্রমিকের কথা বলবেন, আবার এদের বাদ দিয়ে কম টাকায় নতুন শ্রমিক নেবেন৷ তাহলে কিভাবে ভালো সার্ভিস পাবেন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ