থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের পাশের একটি শহরের শপিং মলে গুলি চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করেছে দেশটির সেনাবাহিনীর এক সদস্য৷ পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় ঐ সৈন্য৷
বিজ্ঞাপন
রাতভর অভিযানের পর আইন শৃঙ্খলা সদস্যদের গুলিতে নিহত হলেন শপিং মলে হামলাকারী থাই সৈন্য৷ তার আগে ২৬ জনকে হত্যা করেন তিনি৷ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩১ জন৷ ঘটনাটি ঘটেছে ব্যাংককের উত্তর পূর্ব শহর নাখন রাটশাসিমাতে৷
রোববার সকালে ফেসবুকে অভিযান সমাপ্তির ঘোষণা দেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল৷ তিনি পুলিশ এবং সেনাসদস্যদের ধন্যবাদ দেন৷ জানান হামলাকারী নিহত হয়েছে৷
ঠিক কী কারণে এই হামলা চালানো হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ তবে কমান্ডিং অফিসারের এক আত্মীয়ের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের কারণে তিনি ক্ষিপ্ত ছিলেন বলে উল্লেখ করেছে সংবাদ সংস্থাগুলো৷
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি নাখন রাটশাসিমার একটি সেনা ক্যাম্পে প্রথমে সহকর্মী ও এক নারীকে গুলি করে হত্যা করেন৷ এরপর ব্যারাক থেকে তিনি অস্ত্র ও সামরিক যান নিয়ে পালিয়ে যান৷ পরে টার্মিনাল টুয়েন্টি ওয়ান নামের একটি শপিং মলে ঢুকে গুলি চালাতে শুরু করেন৷ এক পর্যায়ে তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দেন৷ যদিও তার অ্যাকাউন্টটি সরিয়ে ফেলার কথা জানিয়েছে ফেসবুক৷
১২ ঘন্টার অভিযানের পর ঐ সৈন্যকে নিবৃত্ত করতে সমর্থ হয় থাইল্যান্ডে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা৷ এর মাঝে বিভিন্ন পর্যায়ে শপিং মলে আটকা পড়াদের বের করে আনেন তারা৷ তবে গুলিতে প্রাণ হারান ২৬ জন৷
এফএস/এআই (এপি,এফপি, রয়টার্স)
যে সব দেশে সাধারণ মানুষের হাতে বেশি অস্ত্র
স্কুলে ঢুকে গুলি চালিয়ে মানুষ মারার ঘটনা বিশ্বে নতুন নয়৷ আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতাকেই এর জন্য দায়ী করা হয়৷ ‘ছোট অস্ত্র সমীক্ষা ২০১৮’- তে দেখা গেছে দুনিয়ায় বিভিন্ন দেশের প্রতি ১০০ নাগরিকের কাছে গড়ে কয়টি করে হাতিয়ার থাকে৷
ছবি: Imageo
অ্যামেরিকা
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০০ জনের কাছে ১২১ টি বন্দুক থাকে৷ সাধারণ মানুষের কাছে বেশি আগ্নেয়াস্ত্র আছে এমন দেশের তালিকায় শীর্ষে এই দেশ৷ অ্যামেরিকায় বন্দুকধারীর হামলার মতো পৈশাচিক ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর আসে৷ এ কারণে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার এবং এর প্রদর্শনকে নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে আসছে অ্যামেরিকার বিভিন্ন সংগঠন৷ অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যের কর্তৃপক্ষের তাতে সায়ও ছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Gombert
ইয়েমেন
অ্যামেরিকায় পরেই ইয়েমেন৷ ১০০ জনের কাছে গড়ে ৫৩ টি বন্দুক থাকে সেখানে৷ এমনিতে সব দেশেই গোপনে অস্ত্র বহনের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ অর্থাৎ, কাউকে অস্ত্র বহন করতে হলে তা দৃশ্যমান থাকতে হবে, লুকিয়ে রাখা যাবে না৷ এমনকি এক অঙ্গরাজ্য থেকে অন্য অঙ্গরাজ্যে যেতে চাইলে সেই অঙ্গরাজ্যের অনুমতি লাগবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Y. Arhab
সার্বিয়া এবং মন্টেনেগ্রো
১০০ জনের কাছে গড়ে ৩৯ টি বন্দুক পাওয়া যায় সেখানে৷
ছবি: Armend Nimani/AFP/Getty Images
ক্যানাডা
১০০ জনের কাছে ৩৫ টি বন্দুক থাকে সেখানে৷ অ্যামেরিকার তুলনায় ক্যানাডার অস্ত্র আইন অনেকটাই কঠোর৷ এক বিবৃতিতে ক্যানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ক্যানাডার আইন ভিন্ন৷
ছবি: picture-alliance/Zuma Press/M. Renwick
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে প্রতি ১০০ জনের কাছে গড়ে ৩২ টি বন্দুক আছে৷ সম্প্রতি একটি কারিগরি স্কুলে এক ছাত্রের বেপরোয়া গুলি চালানোর ঘটনার পর সে দেশের প্রধানমন্ত্রীও অস্ত্র আইন কঠোর করার আহ্বান জানিয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/A. Dedert
লেবানন
লেবাননে প্রতি ১০০ জনের কাছে ৩২ টি বন্দুক পাওয়া যায়৷
ছবি: DW/Anchal Vohra
অস্ট্রিয়া
অস্ট্রিয়াতে প্রতি ১০০ জনের কাছে ৩০ টি বন্দুক পাওয়া যায়৷
ছবি: Imageo
নরওয়ে
সেখানে প্রতি ১০০ জনের কাছে ২৯ টি বন্দুক থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Medichini
সুইজারল্যান্ড
প্রতি ১০০ জনের কাছে ২৮টি বন্দুক থাকে সুইজারল্যান্ডে৷
ছবি: DW/M. von Hein
জার্মানি, ফ্রান্স, ইরাক
সাধারণ মানুষের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার সমীক্ষায় দশম স্থানে একইসঙ্গে রয়েছে জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইরাকের নাম৷ এ সব দেশে প্রতি ১০০ জনের কাছে ২০ টি বন্দুক থাকে৷