৪৫ সেকেন্ডের ছোট এ ভিডিওটি দেখা গেছে কৃষাঙ্গ দু'জনের কাছে এমনকি সামান্য ব্যাগ পর্যন্ত ছিল না৷ পরে বিচারক তাদের বেকসুর খালাস দিলেও বর্ণবাদী আচরণের কারণে টুইটারে স্টারবাকস বর্জনের দাবিতে উঠেছে ঝড়৷
বিজ্ঞাপন
অ্যামেরিকার ফিলাডেলফিয়ার স্টারবাকস-এর একটি শাখার টয়লেট ব্যবহার করতে গিয়েছিলেন দু'জন কৃষ্ণাঙ্গ ৷ কিন্তু যেহেতু তারা কিছু কেনেননি, এ অজুহাতে ঐ শাখার একজন কর্মী তাদেরকে টয়লেট ব্যবহার করতে দিতে বাধা দিয়েছেন৷ এই ঘটনা নিয়ে বিতণ্ডার এক পর্যায়ে বিক্রয়কর্মী পুলিশ ডাকেন৷
টুইটার ও ইউটিউবে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওটিতে দেখা গেছে, এর কিছুক্ষণ পর একদল পুলিশ এসে কৃষ্ণাঙ্গ দু'জনকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে৷ এ সময় একজন শ্বেতাঙ্গকে বলতে শোনা যাচ্ছিল – ‘‘এটা খুবই হাস্যকর৷ তাদের অপরাধ কী? তারা এখানে আমার সাথে দেখা করতে এসেছে৷''
৪৫ সেকেন্ডের ছোট এ ভিডিওটি দেখা গেছে কৃষাঙ্গ দু'জনের কাছে এমনকি সামান্য ব্যাগ পর্যন্ত ছিল না৷ এ ঘটনায় অপরাধ সংগঠিত হওয়ার পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে আটকদের ছাড়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু টুইটারে উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়৷
১২ এপ্রিল ওই ভিডিও প্রকাশের পর টুইটারে মোট ভিউ হয় ৮ মিলিয়ন৷ স্টারবাকস-এর বর্ণবাদী এ আচরণের প্রেক্ষিতে খোলা হয় একটি হ্যাশট্যাগ – #BoycottStarbucks৷ পরে স্টারবাকস-এর প্রধান নির্বাহী কেভিন আর জনসন এ ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেন৷ ভিডিওটি রিটুইট হয়েছে ১ লাখ ৬২ হাজার বার৷ ফেইসবুকেও এ ঘটনাটির ভিডিও ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা হয়েছে৷ ভিউ হয়েছে লক্ষাধিকবার৷ আর ইউটিউবে চারদিনে এটা দেখা হয়েছে ৫ লাখ ৬৬ হাজার বারেরও বেশি৷
ইন্দোনেশিয়ার ‘টয়লেট ক্যাফে’
জাতিসংঘের হিসেবে, ইন্দোনেশিয়ায় প্রতি চারজনের একজন এখনও প্রকাশ্যে মলত্যাগ করেন৷ এ ব্যাপারে ইন্দোনেশীয়দের সচেতন করতে অভিনব এক উপায় বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Wibowo
বিশ্বে দ্বিতীয়
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ-এর এক যৌথ প্রতিবেদন বলছে, ইন্দোনেশিয়ার প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে থাকেন৷ অর্থাৎ প্রতি চারজনের একজন৷ প্রকাশ্যে মলত্যাগকারীর সংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বে সবার উপরে আছে ভারত, তারপরেই ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান৷ প্রতিবেদনটি পড়তে উপরে ‘+’ চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অভিনব উদ্যোগ
প্রকাশ্যে মলত্যাগ বিষয়টি স্বাস্থ্যসম্মত নয়৷ তাই টয়লেট ব্যবহারে সবাইকে সচেতন করতে দেশটির এক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বুডি লাকসোনো ‘টয়লেট ক্যাফে’ চালু করেছেন৷ নাম ‘জামবান ক্যাফে’৷ ইন্দোনেশীয় শব্দ ‘জামবান’-এর অর্থ টয়লেট৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Wibowo
এপ্রিলে চালু
জাভা দ্বীপের সেমারাং এলাকায় চলতি বছরের এপ্রিলে ক্যাফেটি চালু হয়৷ ছবিতেই দেখতে পাচ্ছেন, কোথায় খাবার পরিবেশন করা হয়েছে আর কোথায় বসে ক্রেতারা খাওয়া দাওয়া করেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Wibowo
তবে এটিই প্রথম নয়
ইন্দোনেশিয়ার আগে তাইওয়ান ও রাশিয়াতে টয়লেট ক্যাফে চালু হয়েছে৷ ছবিতে রাশিয়ার ক্যাফেটি দেখতে পাচ্ছেন৷ তবে পার্থক্য হচ্ছে, ঐ দুই দেশে অভিনব ডিজাইনের কথা বিবেচনা করে ওরকম ক্যাফে চালু হয়েছে৷ আর ইন্দোনেশিয়ারটি চালু হয়েছে জনগণকে সচেতন করতে৷
ছবি: Imago
ক্রেতাদের ভাবনা
২৭ বছরের মুকুদাস বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘প্রথমে এই ব্যাপারটায় আমি দারুণ বিরক্ত ছিলাম৷ তবে কৌতূহলের কারণে শেষ পর্যন্ত কিছু খাবার খেয়েছি৷ আমার মনে হয়, প্রচারণা সফল করতে এই পরিকল্পনাটি দারুণ৷’’ ১৫ বছরের আনিশা বলেন, ‘‘ক্যাফের মালিক আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, যে খাবার স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিষ্কার উপায়ে রান্না করা হয়েছে৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/S. Wibowo
সমালোচনা
জামবান ক্যাফের মালিক লাকসোনো জানিয়েছেন, ইন্দোনেশিয়ার অনেক মানুষের যে এখনও টয়লেট নেই এই ক্যাফের মাধ্যমে সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে৷ তবে কেউ কেউ যে এই ক্যাফেকে ইসলামি আইনের পরিপন্থি ও অনুপোযোগী বলে এর সমালোচনা করছেন সেই বিষয়টিও জানিয়েছেন তিনি৷