1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

৩০ পোশাক কারখানা বন্ধ, বেতন-বোনাস নিয়ে জটিলতা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২ জুন ২০১৯

ঈদের আগে কমপক্ষে ৩০টি পোশাক কারখানা কর্মীদের বেতন-বোনাস না দিয়েই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে শ্রমিক নেতারা দাবি করেছেন৷  

Bangladesch Textilfabrik Dhaka
ছবি: Reuters/A. Biraj

পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন ও  বোনাস প্রদান নিয়ে এখনো জটিলতা চলছে৷ পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ কিছু সমস্যার কথা স্বীকার করেছে ৷

পোশাক কারখানার কর্মীদের ৩০ মে'র মধ্যে বোনাস এবং  মে'র মধ্যে বেতন দেয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু শ্রমিক ও শ্রমিক নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ১৫-২০ ভাগ কারখানায় বোনাস দেয়া হয়নি৷ তবে বিজিএমইএ দাবি করেছে ২ জুন পর্যন্ত ৯০ ভাগ  কারখানায় বেতন দেয়া হয়েছে৷

কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই বেতন-বোনাস নিয়ে শ্রমিকরা কোথায় যাবেন? কিভাবে ঈদের কেনাকাটা করবেন?

বাংলাদেশ পোশাক শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তৌহিদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গত শনিবার পর্যন্ত আমাদের কাছে হিসাব ছিলো যে ৬০ ভাগ কারখানায় বেতন দেয়া হয়েছে৷ কিছু কারখানায় রবিবার বেতন দেয়া হচ্ছে৷  আরো কিছু কারখানায় সোমবার বেতন দেয়া হবে৷ তখন বোঝা যাবে আসলে কতভাগ পোশাক কারখানা শ্রমিকদের বেতন দিয়েছে৷''

‘বোনাস না পাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা কমপক্ষে ১০ শতাংশ’

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘৮০-৮৫ ভাগের মত কারখানা শ্রমিকদের ঈদের বোনাস দিয়েছে৷ এরমধ্যে অনেক অসঙ্গতি আছে৷ মূল বেতনের পুরোটাই বোনাস হওয়ার কথা৷ কিন্তু সেটা সব কারখানায় দেয়া হচ্ছেনা৷ কিছু কারখানা মূল বেতনের ৬০ ভাগ বোনাস হিসেবে দিয়েছে, আর কেউ দিয়েছে মূল বেতনের ৪০ ভাগ৷ আর অনেক কারখানা শ্রমিকদেরকে মে মাসের ২০ দিনের বেতন দিয়েছে, পুরো মাসের দেয়নি৷ এই সব নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ আছে৷'' তবে বিজিএমইএ দাবি করছে, শতভাগ কারখানায় শ্রমিকদের বোনাস দেয়া হয়েছে৷

এক বছর পূর্ণ না হওয়ায় বোনাস পায়নি অনেকে

জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কিছু বড় ফ্যাক্টরি বাদে আর সবাই নামকাওয়াস্তে বোনাস দিয়েছে৷ তারা তাদের সুবিধামত দিয়েছে৷ এদিকে শ্রমিকদের মধ্যে যাদের চাকরির মেয়াদ ১ বছর (১২ মাস) পূর্ণ হয়নি তারা বোনাস পাননি৷ বোনাসের ব্যাপারে আইনে ফাঁক আছে, তারা সেই সুযোগ নিয়েছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘বেতন বাড়ার পর অনেক শ্রমিক কর্মস্থল পরিবর্তন করেছেন৷ ফলে বোনাস না পাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা কমপক্ষে ১০ শতাংশ হবে৷ ১১ মাস হয়েছে এমন শ্রমিককেও বোনাস দেয়া হয়নি৷''

পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করেন৷ সে হিসেবে, ৪ লাখ শ্রমিক এই আইনের কারণে বোনাস পাননি৷

৩০-৩৫ কারখানা বন্ধ

ঈদের আগে অর্থাৎ গত একমাসে ৩০ থেকে ৩৫টি কারখানা শ্রমিকদের বেতন বোনাস না দিয়েই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে  বলে জানান তৌহিদুর রহমান৷ তিনি বলেন, ‘‘শনিবার গাজীপুরের ওয়েসিস  স্পোর্টস ওয়্যার ঘেরাও করা হয়েছে৷ মার্কপোও নামের একটি কারখানাও বেতন-বোনাস না দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে৷ কারখানাগুলোর অধিকাংশই গাজীপুরে৷ সিরাজুল ইসলাম রনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ঈদের আগে কমপক্ষে ১০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন৷ তারা ঈদের পর হয়তো চাকরি পাবেন৷''

তবে ২৮টি কারখানা বন্ধ হয়েছে বলে স্বীকার করেছে বিজিএমইএ৷ সংগঠনটির সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘‘কারখানাগুলোর সমস্যা মিটিয়ে সঠিকভাবে বন্ধের ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷''

‘বেতন-বোনাস নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ আছে’

This browser does not support the audio element.

বিজিএমইএ'র বক্তব্য

বিজিএমইএ'র সভাপতি রুবানা হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের সদস্য ৯১৬টি কারখানার বেতন-বোনাস নিয়ে মনিটরিং প্রয়োজন৷ সেটা করা হচ্ছে৷ আমরা  ৬০০ কারাখানা পরিদর্শন করেছি যেখানে চ্যালেঞ্জ আছে৷ ৬৫টি কারখানার সমস্যার সমাধান ইতিমধ্যে করা হয়েছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘বিজএমইএ'র সদস্য কারখানাগুলো শ্রমিকদের বোনাস দিয়েছে৷ ৯০ ভাগ কারখানায় বেতন দেয়া হয়েছে৷ ১৫০ টি কারখানা সোমবার বেতন দেবে৷''

শ্রমিকদের মে মাসের ২০ দিনের বেতন দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এটা সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছিলো যে শ্রমিকদের ২০ দিনের বেতন দেয়া হবে৷ তারা ঈদের পরে বাকি ১০ দিনের বেতন পাবেন৷''

প্রসঙ্গত, প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কারখানা বিজিএমইএ'র সদস্য৷ এর বাইরেও আরো কমপক্ষে দুই হাজার পাঁচ'শ পোশাক কারখানা আছে৷ এই কারখানাগুলোতে কর্মরত শ্রমিকদের বিষয়টি কে দেখবে তাও জানেনা বিজিএমইএ৷

এদিকে, এবার ঈদে পোশাক শ্রমিদের বাড়ি যাওয়ার জন্য ৬০ টি বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করেছে বিটিআরসি৷ কিন্তু পোশাক শ্রমিকদের বলছেন, শেষ মুহূর্তেও বেতন বোনাস নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা আসলে তাদের ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত রাখছে৷ তাঁরা কখন ঈদের কেনাকাটা করবেন আর কখন বাড়ি যাবেন সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে৷

বেতন-বোনাস পেয়েছেন পাটকল শ্রমিকরা

শেষ পর্যন্ত বেতন-বোনাস পেয়েছেন সরকারি পাটকল শ্রমিকরা৷ বকেয়া বেতনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছিলেন তাঁরা৷ রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল শ্রমিক (সিবিএ নন-সিবিএ) ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক খলিলুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শ্রমিকদের ১৪ সপ্তাহের বকেয়া বেতন, চলতি বেতন এবং বোনাস দেয়া হয়েছে৷''

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জুটমিল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) ২৭টি জুটমিলে প্রায় ৮০ হাজার শ্রমিক কর্মরত আছেন৷

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ