দেয়ালে উঠে তিনি বললেন, ‘ট্রাম্পের পরিকল্পনা উদ্ভট’
৯ মার্চ ২০১৭
প্রেসিডেন্ট হয়েই নির্বাহী আদেশে সই করে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন মেক্সিকো সংলগ্ন সীমান্তে দেয়াল গড়বেই যুক্তরাষ্ট্র৷ তাঁকে ভালো জবাব দিয়েছেন ব্রাউলিয়া গুয়েরা৷ তাই তাঁর ভিডিওটি দেখছে সারা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ৷
বিজ্ঞাপন
এক সপ্তাহ আগেও বিশ্বের মানচিত্রে ব্রাউলিয়া গুয়েরা নামটা কোনো গুরুত্বই পায়নি৷ মেক্সিকোর বাইরে কেউ তাঁকে চিনতো কিনা সন্দেহ৷ কিন্তু গত ২ মার্চের পর থেকে সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে দেখছে তাঁর একটি ভিডিও৷ ভিডিওটি শেয়ার করছেন অনেকে৷ অনেকেই বাহবা জানাচ্ছেন ব্রাউলিয়া গুয়েরাকে৷
মেক্সিকোর কুয়েরেতারো রাজ্যের সংসদ সদস্য ব্রাউলিয়া গুয়েরা৷ কয়েকদিন আগে তিনি চলে গিয়েছিলেন মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের এমন এক জায়গায় যেখানে দু'দেশের সীমান্তকে আলাদা করেছে ৩০ ফুট উঁচু দেয়াল৷ সেখানে গিয়েই দেয়ালে উঠে বসে পড়েন ব্রাউলিয়া৷ সেই দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করা হয়৷ তারপর টুইটারে শেয়ারও করা হয়৷
এ পর্যন্ত শুধু টুইটারেই ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৭ লক্ষ ৬৬ হাজার বার৷ এছাড়া ফেসবুক, ইউটিউবসহ অনেক মাধ্যমেই অসংখ্যবার শেয়ার করা হয়েছে ভিডিওটি৷ ফলে বিশ্বের আনাচেকানাচে পৌঁছে যাচ্ছে মেক্সিকো সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীর গড়ার পরিকল্পনার বিষয়ে ব্রাউলিয়া গুয়েরার বক্তব্য৷ অনেকের মতো মেক্সিকোর এই রাজনীতিবিদও মনে করেন, দেয়াল গড়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করা যাবে না৷ তাঁর ধারণা যে ঠিক তা তিনি প্রমাণও করেছেন দেয়ালে উঠে৷
৩০ ফুট উঁচু দেয়ালে উঠে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি এই দেয়ালের উচ্চতা মাপতে পেরেছি, এতে চড়তে পেরেছি এবং ঠিক এই জায়গাটায় উঠে আমি বসতে পেরেছি৷ এখন আমার পক্ষেও খুব সহজেই লাফ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখা সম্ভব৷ ফলে বোঝাই যায়, দেয়াল গড়ার ভাবনাটা অপ্রয়োজনীয় এবং উদ্ভট৷’’
সংবাদমাধ্যমও লুফে নিয়েছে ব্রাউলিয়া গুয়েরার এই ভিডিও৷
তবে ব্রাউলিয়া যেমন ট্রাম্পের দেয়াল গড়ার পরিকল্পনার যৌক্তিকতা এবং কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ঠিক সেভাবে ব্রাউলিয়ার বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ৷ তাঁরা বলছেন, ব্রাউলিয়া তো মাটি থেকে দেয়ালের ওপর পর্যন্ত ওঠার কোনো ছবি দেননি, তিনি যে একা একা, কারো সাহায্য ছাড়া সেখানে উঠেছেন, এই ভিডিও কি তা প্রমাণ করতে পেরেছে?
এসিবি/ডিজি
বিশ্বের কয়েকটি বিপজ্জনক সীমান্ত
দুই দেশের মধ্যে সীমানা নিয়ে যুদ্ধ কিংবা উন্নত জীবনের আশায় এক দেশের নাগরিকের প্রতিবেশী দেশে যাওয়া – ইত্যাদি কারণে বিশ্বের কয়েকটি সীমান্ত বিপজ্জনক বলে পরিচিত৷ ছবিঘরে থাকছে সেগুলোর কথা৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত
এই সীমান্তের ৪০টি ‘স্পর্শকাতর’ অংশে ‘লেজার’-এর বেড়া দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ভারত৷ পাকিস্তান থেকে ভারতে অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে৷ এর ফলে বেড়ার সংস্পর্শে কিছু আসলে উচ্চস্বরে সাইরেন বেজে উঠবে৷ ২০১১ সালের জুনে ‘ফরেন পলিসি’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮০০ মাইল দীর্ঘ এই সীমান্তে নিহত হয়েছে এক লক্ষ ১৫ হাজারের বেশি মানুষ৷ প্রতিবেদনটি পড়তে উপরে ‘+’ চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Arif Ali/AFP/Getty Images
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ এর হাতে ৪৬ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে৷ আহত হয়েছে ৭৩ জন৷ এছাড়া অপহরণ করা হয়েছে ৫৯ জনকে৷ কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত শিগগিরই বেড়া দেয়ার কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানান৷
ছবি: Str/AFP/Getty Images
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত
উন্নত জীবনের আশায় মেক্সিকো থেকে প্রতিবছর অনেক মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেন৷ আর তা করতে গিয়ে প্রাণ যায় অনেকের৷ আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর ২০১৪ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, গত ১৪ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে ৬,০০০ এর বেশি লোক নিহত হয়েছে৷ প্রতিবেদনটি পড়তে উপরে ‘+’ চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Gordon Hyde
ভূমধ্যসাগর
যুদ্ধ আর সংঘাত এড়াতে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে ইউরোপে শরণার্থী প্রবেশ করছে৷ এদের একটি বড় অংশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করে৷ এতে প্রাণ যায় অনেকের৷ জার্মান ম্যাগাজিন ‘ডেয়ার স্পিগেল’ গত অক্টোবরে এক প্রতিবেদনে ভূমধ্যসাগরকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সীমান্ত বলে আখ্যা দেয়৷ ২০১৫ সালে ভূমধ্যসাগরে নিহতের সংখ্যা ছিল ৩,৭৭০৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Palacios
আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্ত
প্রায় দেড় হাজার মাইল দীর্ঘ ‘ডুরান্ড লাইন’ নামে পরিচিত সীমান্ত এখনও মেনে নেয়নি আফগানিস্তান৷ পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখা রাজ্যের পশতুন অধ্যুষিত এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে আফগানিস্তান৷ এই সীমান্তকে ঘিরে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে৷
ছবি: Reuters
উত্তর কোরিয়া-দক্ষিণ কোরিয়া
বিশ্বের সবচেয়ে সামরিক সজ্জায় সজ্জিত সীমান্ত বলা হয় একে৷ ১৯৫৩ সালে কোরিয়া যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর প্রায় দেড়শো মাইল দীর্ঘ এই সীমান্তের দুই পাশ থেকে সৈন্যদের সরিয়ে দেয়া হয়৷ তখন থেকেই দুই দেশের সৈন্যরা প্রায় আড়াই মাইল প্রশস্ত এই সীমান্তের দুই পাশে অবস্থান করছে৷