পূর্ব জার্মানির কমিশনার কারস্টেন শ্নাইডার ডিডাব্লিউর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সাবেক পূর্ব জার্মানির অর্থনৈতিক উত্থানের প্রশংসা করেছেন৷ কিন্তু পুনরেকত্রীকরণ বিষয়ক এক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে এখনও অনেক বিভাজন রয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
বার্লিন প্রাচীর পতনের তিন দশকেরও বেশি সময় পরে জার্মানি রাজনৈতিকভাবে একত্রিত হলেও এখনও রয়ে গেছে বিভাজন রেখা। পূর্ব জার্মানি বিষয়ক মন্ত্রী কারস্টেন শ্নাইডার ডিডাব্লিউকে বলেন, "পুনর্মিলন সম্পূর্ণ হয়েছে, তবে এটি নিখুঁত নয়।" তিনি মনে করেন, নিখুঁত পুনর্মিলনের জন্য মানুষের মনের মধ্যে সেই ধারণাটিকে সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা প্রয়োজন৷
৩ অক্টোবর দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণ দিবস। এ বিষয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের দিনেই ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন জার্মানর ফেডারেল সরকারের পূর্ব জার্মানি বিষয়ক কমিশনার।
পূর্ব-পশ্চিমে সম্পদের ব্যবধান রয়েছে?
শ্নাইডার মনে করিয়ে দেন যে, ২০২৩ সালে পুরো জার্মানিতে পেনশনের মাত্রায় সামঞ্জস্য আনাটা একটা বড় সাফল্য। প্রাক্তন কমিউনিস্ট জার্মান ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক (পূর্ব জার্মানি)-এর অনেক বাসিন্দাই পেনশন বৈষম্য নিয়ে দীর্ঘদিন অভিযোগ করে আসছিলেন।
জার্মানির ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির ফলে সাবেক পূর্ব জার্মানির রাজ্যগুলির কর্মচারিরাও উপকৃত হয়েছেন। তবে শ্নাইডার স্বীকার করেন, "মজুরি এবং সম্পদের মধ্যে এখনও পার্থক্য রয়েছে।"
২০২২ সালে পশ্চিম জার্মানিতে গড় বার্ষিক বেতন পূর্ব জার্মানির তুলনায় বারো হাজার ইউরো ( প্রায় ১৪ লাখ টাকা) বেশি ছিল। নেট সঞ্চয়ের পরিসংখ্যান আরও বেশি অসমতার চিত্র তুলে ধরে। ২০২১ সালে, জার্মান ফেডারেল ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমের রাজ্যগুলোতে সঞ্চয়ের মধ্যমান পূর্বের রাজ্যগুলোর তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি ছিল৷
তিন দশক পেরিয়েও কেন প্রাসঙ্গিক ‘দ্য ওয়াল’
১৯৯০ সালে সংগীত জগতে আলোড়ন তুলেছিল রজার ওয়াটার্সের ‘দ্য ওয়াল’ কনসার্ট৷ কেন আজও স্মরণীয় এই কনসার্ট, জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Imago/Brigani-art
১৯৯০ সালের বার্লিন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যাবার আগে বার্লিনের পটসডামার প্লাটজ ছিল শহরের সংস্কৃতিচর্চার প্রাণকেন্দ্র৷ এরপর ১৯৮৯ সালে পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের পর একটু একটু করে আবার পটসডামার প্লাটজ তার পুরোনো চেহারা ফিরে পেতে শুরু করে৷ ১৯৯০ সালে এই পরিবেশেই ‘দ্য ওয়াল’ শিরোনামে একটি কনসার্ট হয় এখানে৷ মূল উদ্যোক্তা ছিলেন লন্ডনভিত্তিক পিংক ফ্লয়েড ব্যান্ডের সাবেক সদস্য রজার ওয়াটার্স৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zimmermann
কেন এই কনসার্ট?
জার্মান পত্রিকা ডেয়ার স্পিগেল এই কনসার্টের আগেই একটি প্রতিবেদনে বলে, ‘‘এখানে কোনো নাৎসিদের মিছিল হবে না, পুনরেকত্রীকরণের উদযাপনও থাকবে না৷’’ বদলে, এই কনসার্ট ছিল সেই সময়ের অন্যতম বড়মাপের একটি চ্যারিটি কনসার্ট৷ ব্রিটিশ ফাউন্ডেশনের ‘মেমোরিয়াল ফান্ড ফর ডিজাস্টার রিলিফের’ জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হয় সেদিন৷
ছবি: Imago/Brigani-art
কনসার্টের মঞ্চ
৫৫০ ফুট উঁচু, ১৩৫ ফুট গভীর ছিল সেই কনসার্টের মঞ্চ৷ পটসডামার প্লাটজের মতো জায়গায় ৬০০ জনের শ্রমে এই মঞ্চ তৈরি করতে লেগেছিল প্রায় একমাস৷ বিরাট আকারের ক্রেনে করে নিয়ে আসা হয়েছিল মঞ্চসজ্জার সরঞ্জাম৷ ছিল হেলিকপটার থেকে শুরু করে ব্রায়ান অ্যাডামস, সিন্ডি লাউপার ও স্করপিওন্স ব্যান্ডের সুরেলা শুভেচ্ছাও৷
ছবি: Imago/Brigani-art
দর্শকের ভিড়
২১ জুলাই, ১৯৯০ সালে ‘দ্য ওয়াল’ কনসার্ট দেখতে পটসডামার প্লাটজে ভিড় করেছিলেন সাড়ে তিন লাখ মানুষ৷ এছাড়া, টেলিভিশনের পর্দায় সেই কনসার্ট উপভোগ করেন আরো কয়েক লাখ দর্শকশ্রোতা৷ সদ্য পুনরেকত্রিত জার্মানিতে এই কনসার্ট ছিল সুদিনের আভাস৷
ছবি: Imago/Brigani-art
‘দ্য ওয়াল’ নাম কেন?
এই শিরোনামে ১৯৭৯ সালে পিংক ফ্লয়েড ব্যান্ডের একটি অ্যালবাম প্রকাশ পায়৷ শিল্পী রজার ওয়াটারস ১৯৮৫ সালে ব্যান্ড ছেড়ে বেরিয়ে আসলেও, কনসার্টের জন্য অ্যালবামের নামটিই ব্যবহার করেন৷ ১১ বছর পর সেই নাম দেয়াল ভেঙে সদ্য এক হওয়া বার্লিনের জন্য অন্যরকম অর্থ বয়ে এনেছিল৷ আজও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া অ্যালবামগুলির একটি এটি৷ এর পেছনে এই কনসার্টের ভূমিকা অনস্বীকার্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Kneffel
কীসের দেয়াল
কনসার্টের মঞ্চে সেদিন ৫৫৭ ফুট লম্বা ও ৮২ ফুট উঁচু একটি কৃত্রিম ইটের প্রাচীর ছিল, যা আসলে জার্মানির বিভক্তির কষ্টকর স্মৃতির প্রতীক৷ কনসার্ট শেষে, দেয়ালের গায়ে ভেসে ওঠে কয়েকটি শব্দ ‘দেয়াল ভাঙো’ ও তার পরের মুহূর্তেই ভেঙে পড়ে সেই দেয়াল৷ সেদিন, দর্শকরা শুধু এক হয়ে গানই শোনেননি, একসাথে দেয়াল ভাঙারও সাক্ষী হন৷
ছবি: Imago/Brigani-art
6 ছবি1 | 6
সাবেক পূর্বের অর্থনৈতিক উত্তরণ
পূর্ব জার্মানি জুড়ে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আশা করেছিলেন শ্নাইডার। অঞ্চলটিকে তিনি সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে বিনিয়োগের কেন্দ্র হিসাবে দেখেন।
সাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যের রাজধানী ম্যাগডেবার্গে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি ইন্টেল ৩০ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগে চিপ কারখানার পরিকল্পনা করছে। এটি জার্মানির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের একটি।
শ্নাইডার বলেন, "পূর্ব জার্মানি এমন একটি অঞ্চল যা পরবর্তী দশকগুলোতে শিল্পখাতে কর্মসংস্থান তৈরির দিকে এগিয়ে চলেছে।" তিনি বলেন, "শক্তির রূপান্তরে শুধুমাত্র পূর্ব জার্মানিই কাজ করতে পারে, কারণ, আমরা পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র।"
ফেডারেল পরিসংখ্যান দপ্তর ডেস্টাটিস-এর পরিসংখ্যান অনুসারে, পূর্ব জার্মানিতে কর্মক্ষম বয়সের লোকের সংখ্যা আগামী কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংস্থাটি বলেছে, ২০২২ সালের শেষ দিকে গোটা জার্মানিতে ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সের মানুষ ছিলেন প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি। এর মধ্য়ে কেবল ৭২ লাখ বাস করছেন পূর্ব জার্মান রাজ্যগুলোতে।
পরবর্তী দুই দশকে জার্মানির পূর্বাঞ্চলে সেই এই বয়সের মধ্যে থাকা মানুষের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ থেকে ১২ লাখ কমবে। ২০৭০ সালের দিকে এই সংখ্যা আরো ২১ লাখ কমতে পারে। পশ্চিমের রাজ্যগুলোতেও এই সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে পশ্চিমের রাজ্যগুলোতে উচ্চ অভিবাসন হারের কারণে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমাটা অপেক্ষাকৃত কম তাৎপর্যপূর্ণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পূর্বের বৈচিত্র্য এবং পপুলিজম
পূর্ব জার্মানির জনগণের মধ্যে অতি-ডানপন্থি দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি - এএফডির প্রতি ক্রমবর্ধমান সমর্থন সম্পর্কে জানতে চাইলে, শ্নাইডার ডিডব্লিউকে বলেন, "পূর্ব জার্মানিতে সব নির্বাচনেই গণতান্ত্রিক দলগুলোরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।"
তিনি পপুলিস্ট রাজনীতির উত্থানের কথা স্বীকার করলেও পূর্ব জার্মানির মানুষের এএফডি-র সমর্থনের কারণ তুলে ধরেন তিনি। লাইপজিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, পূর্ব জার্মানির প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন দেশ শাসন করার জন্য একজন ‘শক্তিশালী নেতা' প্রয়োজন। প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ মনে করেন যে জার্মানিতে বিদেশির সংখ্যা অনেক বেশি।
শ্নাইডার পূর্ব জার্মানিতে অন্তর্ভুক্তি এবং বৈচিত্র্য বৃদ্ধি পাওয়ার প্রসঙ্গে জোর দিতে আগ্রহী। তিনি তার নিজের শহর এরফুর্টের উদাহরণ তুলে ধরেন। সেখানে বসবাসরত জার্মানদের তুলনায় বিদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিকদের অনুপাত ১০ বছর আগের দুই শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ১৮ শতাংশ হয়েছে।
তিনি বলেন, "আপনি যদি একটি ভিন্ন সংস্কৃতির কাউকে চেনেন এবং আপনার নিজের সাংস্কৃতিক সচেতনতা বাড়ান, তাহলে কুসংস্কারগুলো ধীরে ধীরে নাই হয়ে যাবে।"
পূর্ব এবং পশ্চিম কতটা ঐক্যবদ্ধ?
পূর্ব জার্মানির রাজ্যগুলোতে এএফডি বিশেষভাবে গ্রামীণ অঞ্চলে শক্তিশালী। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এসব রাজ্যে কমতে থাকা জনসংখ্যা এবং নিম্নমানের সরকারি পরিষেবা রয়েছে।
শ্নাইডার বলেন, জার্মানি জুড়ে শহর এবং গ্রামীণ এলাকার মধ্যে যে পার্থক্য, সেটা পশ্চিম অঞ্চলের চেয়ে পূর্বেই বেশি বোঝা যায়।
তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন যে দেশের দুই অঞ্চলের মানুষের দেশ নিয়ে ভিন্নভাবে ভাবেন। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ৫৭ শতাংশ জার্মানই মনে করেন পূর্ব এবং পশ্চিম "একসঙ্গে বেড়ে ওঠেনি"।
কিন্তু শ্নাইডার ডিডাব্লিউকে বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক পদক্ষেপই সব বৈষম্য়ের সমাধান করতে পারবে না।
তিনি বলেন, "সমাজ থেকেই এটা উঠে আসতে হবে। মানুষের আগ্রহ তৈরি করতে হবে এবং একে অন্যের প্রতি আচরণে বদল আনতে হবে। আমি মনে করি যে, অনেক পূর্ব জার্মান প্রায়শই নিজেদের কিছুটা প্রতারিত মনে করেন এবং বাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মনে করেন। এবং এমন ভাবার আসলে কোন কারণও নেই।"
ভবিষ্যতে দুই অঞ্চলের মধ্যে আরো বেশি আগ্রহ এবং নানা ধরনের আদানপ্রদান দেখতে চান তিনি।
ফেরেংক গাল/এডিকে
বিশ্ব ভ্রমণ: জার্মানির পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের শিল্প
বার্লিন দেয়াল শিল্প ইতিহাসকে বিভক্ত করেছে৷ তাই সমান্তরালভাবে ৬০ বছরের জার্মান শিল্পের ইতিহাস ‘ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ নামে এই প্রদর্শনীতে ফুটে উঠেছে৷ এর আয়োজক ইনস্টিটিউট ফর ফরেন কালচারাল রিলেশন্স৷
ছবি: Julian Röder
পুনরেকত্রীকরণের শিল্প
এই দেয়াল শিল্প ইতিহাসকে বিভক্ত করেছে৷ তাই সমান্তরালভাবে ৬০ বছরের জার্মান শিল্পের ইতিহাস এখানে উঠেছে ফুটে৷ ইনস্টিটিউট ফর ফরেন কালচারাল রিলেশন্স ‘ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ নামে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে৷ এখানে তৎকালীন পূর্ব জার্মানির আলোকচিত্রী সিবিলে ব্যার্গেমান সোভিয়েত ব্লক ভাঙার ক্রমিক চিত্র তুলে ধরেছেন৷
ছবি: Nachlass Sibylle Bergemann/Ostkreuz
গ্রাউন্ড জিরো
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি৷ নাৎসিবাহিনীর অত্যাচারের চিত্রের পর আর কিছু কি দেয়ার থাকতে পারে? এ যেন ‘গ্রাউন্ড জিরো’ থেকে কনটেম্পোরারি আর্ট বা সমকালীন শিল্পের ইতিহাস শুরু৷
ছবি: Bernd Borchardt/VG Bild-Kunst Bonn 2013
অসঙ্গতিপূর্ণ শিল্পের গোপন রহস্য
গ্যারহার্ড আল্টেনবুর্গ জার্মানির পূর্বাঞ্চলের ভিন্নধর্মী শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম৷ তাঁর কাজে কখনোই সামাজিক বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়নি৷ অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আল্টেনবুর্গ সৃষ্টি করেছিলেন গোপন কিছু করার৷ পুনরেকত্রীভূত জার্মানিতে এখন তাঁর কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত৷ এমনকি বুন্ডেসটাগ বা জার্মান সংসদেও তাঁর চিত্রকর্ম ঝোলানো আছে৷
ছবি: Uwe Walter/VG Bild-Kunst, Bonn 2013
পশ্চিমে বিমূর্ত ছবির প্রতি সমর্থন
পশ্চিম জার্মান চিত্রশিল্পী ব্যার্নার্ড শুলৎসের ছবিতে কাব্য যেমন আছে, তেমনি আছে একটা বিমূর্ত ধারণা৷ আইএফএ জানিয়েছে, আল্টেনবুর্গের মধ্যেও একই ধরণের শৈল্পিক চিন্তাভাবনা কাজ করেছে৷ ১৯৫৯ সালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কনটেম্পোরারি প্রদর্শনীতে তাঁদের দু’জনের চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়৷
ছবি: Uwe Walter/VG Bild-Kunst Bonn, 2013
পূর্ব জার্মানির ফটোগ্রাফিতে স্বাধীনতা
গত ৬০ বছরের ফটোগ্রাফিতে পুরো জার্মানির যে বিষয়টি আবিষ্কার হয়েছে, তা হোল স্বাধীন আর্ট ফর্ম৷ তৎকালীন পূর্ব বার্লিনের ফটোগ্রাফার আর্নো ফিশার ১৯৫৭ সালে এই রাস্তার ছবিটি তুলেছিলেন৷ ফিশারের ছবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়, বরং মানুষের অস্তিত্ব বোঝানোর আগ্রহই তাঁর শিল্পকর্মে বেশি লক্ষ্যণীয়৷
ছবি: Bernd Borchardt/Erbengemeinschaft Arno Fischer
উত্তেজনামুলক নয়, পার্থিব
ফটোগ্রাফার সারগেসহাইমার অনেকটা আর্নো ফিশারের মতো, যা দেখেন তারই ছবি তুলতে ভালোবাসেন৷ সারগেসহাইমারের আসল নাম কার্ল-হাইনৎস হার্গেসহাইমার৷ তিনি যতটা না উত্তেজনামূলক বিষয়বস্তুর ছবি তুলতে ভালোবাসতেন, তার চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন পার্থিব কোনো কিছুর ছবি তুলতে৷
ছবি: Chargesheimer
পূর্বের জ্যামিতিক শিল্প
বার্লিন প্রাচীরের পতনের পর আইএফএ জিডিআর শিল্পীদের শিল্পকর্মকে সমর্থন দেয়৷ হ্যার্মান গ্ল্যোকনারও তাঁদের মধ্যে একজন৷ এখানে দেখা যাচ্ছে দেয়ালের যে পাশে যে শিল্পীদের বসবাস, তাঁদের কাজের মধ্যে সম্পর্ক৷
ছবি: VG Bild-Kunst Bonn, 2013
পশ্চিমের জ্যামিতিক শিল্প
দ্বিমাত্রিক রং, ছন্দময় ভঙ্গি: সাবেক পশ্চিম জার্মানির অংশ মিউনিখ শহরের গ্রাফিক শিল্পী গ্যুন্টার ফ্রুট্রুংকের কাজের ধরণটা একেবারেই অন্যরকম৷ তাঁর অন্যতম জনপ্রিয় কাজগুলোর একটি হলো জার্মানির বিখ্যাত স্বল্প মূল্যের বিপণি আল্ডি-র প্লাস্টিক ব্যাগ৷
ছবি: Bernd Borchardt/VG Bild-Kunst Bonn, 2013
গতানুগতিক শিল্পের বিরুদ্ধে
ইওসেফ বয়েসের এই চিত্রকর্মটির নাম ‘আই ডু নট নো আ উইকএন্ড’৷ ১৯৬০ সালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে তিনি দর্শকদের তাঁর ঘণ্টাব্যাপী ‘পারফর্মেন্স’ দিয়ে প্ররোচিত করেছিলেন৷ তাঁর মতো করে পূর্ব-পশ্চিমের বিভেদ নিয়ে এমন কাজ করার মতো সাহস কোনো পূর্ব জার্মান শিল্পী দেখাননি৷
ছবি: Uwe Walter/VG Bild-Kunst Bonn, 2013
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী
অনেক বছর আগে যখন নারীর সম অধিকারের বিষয়টি এত ব্যাপক ছিল না, তখন নারী শিল্পীদের সুযোগ দিয়েছিল আইএফএ৷ ৭০-এর দশকে নারী বিপ্লবীদের পাশাপাশি ভূমিকা রেখেছিলেন নারী শিল্পীরাও৷ তাঁদের মধ্যে অন্যতম কাথারিনা ফ্রিচ৷
ছবি: Copyright: VG Bild-Kunst Bonn, 2013
ড্রেসডেনে ড্যুসেলডর্ফ স্কুল অফ ফটোগ্রাফি
পূর্ব বা পশ্চিম? স্টেশন সিরিজের কয়েকটি ছবির একটি এই ছবিটি৷ ছবিটি ড্যুসেলডর্ফ স্কুল অফ ফটোগ্রাফির কথা মনে করিয়ে দেয়, যেটি বার্ন এবং হিয়া বেশারের তৈরি৷ তাঁরা দু’জন শিল্পকারখানার চুল্লির উপর ফটোগ্রাফির জন্য সুপরিচিত৷
ছবি: VG Bild-Kunst Bonn, 2013
ফটো সাংবাদিকতার চেয়েও বেশি কিছু
প্রথম দেখায় এটি শুধু ২০০১ সালে ইটালিতে অনুষ্ঠিত জি-এইট সম্মেলনের বিক্ষোভের ছবি ছাড়া কিছুই নয়৷ কিন্তু ভালোভাবে দেখলে এটায় একটা নতুন ধরণ চোখে পড়বে, জানান আইএফএ-র কিউরেটর ভিনজেন৷ ফটো সাংবাদিক জুলিয়ান ব়্যোডার এই কিউরেটরের নতুন আবিষ্কার৷