দায়িত্ব নেওয়ার ছয় সপ্তাহের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। লন্ডনের স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে জাতির উদ্দেশে ভাষণে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাজ্যে দীর্ঘ দিন ধরে চলমান বিশৃঙ্খল রাজনীতির মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখ ক্ষমতা গ্রহণ করেন তিনি। তবে কনজারভেটিভ পার্টির এই নেতা কখনোই তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে পারেননি। বরং সার্বিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।
লিজ ট্রাস এরই মধ্যে রাজা চার্লসকে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব থেকেও সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন।
লিজ ট্রাস : ছয় বছরে ব্রিটেনের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী
ছয় বছরে মেয়াদ শেষ হবার আগেই সরে দাঁড়িয়েছেন তিনজন ৷ ব্রিটেনের ৫৬তম প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস কি পারবেন মেয়াদ শেষ করতে? যেভাবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তাতে এ আশা করা যেতেই পারে৷ ছবিঘরে লিজ ট্রাসের বিস্ময়কর উত্থানের গল্প...
ছবি: Dylan Martinez/REUTERS
প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে যেখানে আলাদা
বেলফাস্টের দেয়ালে ব্রিটেনের ইতিহাসের তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী ঋষি সুনাকের ম্যুরাল৷ শিল্পী চিয়ারান গ্যালাঘারের আঁকা ছবিতে দুজনকে দেখা যাচ্ছে বক্সারের রূপে৷ঋষি কনজারভেটিভ পার্টির হয়ে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করলেও ট্রাস এক সময় ছিলেন লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলে৷ ২০১০ সালে কনজারভেটিভদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া ট্রাস ১২ বছরের মধ্যেই হয়ে গেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী৷
ছবি: Clodagh Kilcoyne/REUTERS
মিডিয়ার মুখোমুখি
নির্বাচনি প্রচারের বিভিন্ন পর্যায়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন দুজনই৷ ওপরের ছবিতে বিবিসির মুখোমুখি লিজ ট্রাস৷ ছবিটি গত ৪ সেপ্টেম্বরের৷
ছবি: Jeff Overs/BBC/REUTERS
গাড়ি কারখানায় প্রচার
কনজারভেটিভ দলের প্রায় দুই লাখ সদস্যের কাছে ভোট চাইতে বিভিন্ন অফিস-আদালতেও ঢুঁ মেরেছেন লিজ ট্রাস এবং ঋষি সুনাক৷ ছবিতে জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার কারখানায় ভোটের প্রচারে ৪৭ বছর বয়সি ট্রাস৷
ছবি: Jacob King/REUTERS
পুল খেলোয়াড় ট্রাস
গত ৮ আগস্ট ভোটের প্রচারে লন্ডনের অনসাইড ফিউচার ইয়োথ জোনে গিয়েছিলেন ট্রাস৷ পুল টেবিলটা দেখে একটু খেলে নেয়ার লোভ সামলাতে পারেননি৷
ছবি: Dylan Martinez/REUTERS
বিজয়ী ট্রাস
ডেভিড ক্যামেরনকে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট ছাড়তে হয় ২০১৬ সালে৷ তারপর টেরেসা মে, বরিস জনসনকেও সরতে হয় মেয়াদ শেষ হওয়ার অনেক আগে৷ ৫ সেপ্টেম্বর সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাককে প্রায় ২০ হাজার ভোটে হারিয়ে মার্গারেট থ্যাচার এবং টেরেসা মে -র পর তৃতীয় নারী হিসেবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হন লিজ ট্রাস৷ ছবিতে ভোটের ফল ঘোষণার পর মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ট্রাস আর হাততালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন ঋষি সুনাক৷
ছবি: Stefan Rousseau/REUTERS
বরিসের বিদায়
নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের জন্য ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট ছেড়ে যাচ্ছেন বরিস জনসন৷ উপস্থিত সবাই হাসিমুখে, হাত তালি দিয়ে বিদায় জানাচ্ছেন তাকে৷ জনসনের স্ত্রী ক্যারিও আছেন তাদের কাতারে৷
ছবি: Kevin Coombs/REUTERS
রানির অভ্যর্থনা
নিয়ম অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরের দিন, অর্থাৎ ৬ সেপ্টেম্বর রানি এলিজাবেথের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেন বরিস জনসন৷ তারপর রানির কাছে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করার প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সারেন ট্রাস৷
ছবি: Jane Barlow/REUTERS
স্বামীর সঙ্গে...
গত ৫ সেপ্টেম্বরের ছবি৷ কুইন এলিজাবেথ সেন্টারে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার মাধ্যমে লিজ ট্রাসকে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে একটু আগে৷ জানা হয়ে গেছে ট্রাসই হচ্ছেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী৷ সেই আনন্দে স্ত্রীর পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন হিউ ও’লেয়ারি৷
ছবি: Stefan Rousseau/REUTERS
8 ছবি1 | 8
কয়েক ডজন সাংবাদিকের সামনে দেওয়া বক্তব্যে লিজ ট্রাস বলেন, অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিরাট এক অস্থিরতার সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে এসেছিলেন। যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর পদে এসেছেন, তা পূরণ করতে পারছেন না।
লিজ ট্রাসের সমস্যা শুরু হয় গত ২৩ সেপ্টেম্বর তার সরকারের প্রথম অর্থমন্ত্রী কাওয়াসি কোয়ার্টেং সংক্ষিপ্ত বাজেট উপস্থাপন করার পর। ওই বাজেটে কর কমানোর ঘোষণা দিলে যুক্তরাজ্যের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। কমে যায় ব্রিটিশ পাউন্ডের দাম। এরপর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে কাওয়াসি কোয়ার্টেংকে সরিয়ে দিয়েছিলেন লিজ ট্রাস। তবে তারপরেও তার পদত্যাগের দাবি তুলতে থাকেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতারা।