1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

৫০ হাজার টাকা ‘ঘুস’ এবং ২৪টি জীবন

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

নারায়ণগঞ্জের মসজিদে এসি বিস্ফোরণের নেপথ্য কারণ হিসেবে গ্যাস লাইনের ছিদ্রকে দায়ী করা হচ্ছে৷ মসজিদ কমিটি বলছে ৫০ হাজার টাকা ঘুস না দেয়ায় লাইন মেরামত করা হয়নি৷ তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷

Bangladesh | Gasleitung Explosion in einer Moschee | Angehörige von Opfern
ছবি: Reuters/M. P. Hossain

শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছেন৷ আরো অনেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন বার্ন ইউনিটে৷ প্রথমে ধারণা করা হয়েছিলো নামাজের সময় এসি (শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) বিস্ফোরণে এই দুর্ঘটনা ঘটে৷

মসজিদটিতে ৬ টি এসি ছিলো৷ কিন্ত ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে বলেছে, মসজিদ লাগোয়া গ্যাস লাইনই এই দুর্ঘটনার কারণ৷ নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন সংবাদমাধ্যমকে শনিবার বলেছেন, ‘‘আমরা আগুন নেভানোর জন্য পানি দেওয়ার পর সেখানে বুদ্বুদ দেখতে পেয়েছি৷ এর অর্থ গ্যাস লিকেজ হচ্ছিল৷ মূলত পাইপটি ছিদ্র হয়ে গ্যাস নির্গত হচ্ছিল৷ এদিকে পুরো মসজিদ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হওয়ায় গ্যাস মসজিদের মধ্যেই আটকে ছিল৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘মসজিদের কোনো ফ্যান চালানোর সময় সুইচবোর্ড থেকে আগুনের ফুলকি বের হয়ে মসজিদের ভেতরে থাকা ছয়টি এসিতে আগুন ধরেছে বলে ধারণা করছি৷’’

সাজ্জাদ হোসেন

This browser does not support the audio element.

মসজিদের সামনে গ্যাস লাইনে যে ত্রুটি ছিলো তা স্বীকার করেন মসজিদ কমিটির সভাপতি গফুর মিয়া৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা মাঝে মাঝেই নামাজ পড়তে গেলে গ্যাসের গন্ধ পেতাম৷ আর এটা মেরামতের জন্য আমারা স্থানীয় তিতাস গ্যাস অফিসে যোগাযোগও করেছিলাম৷ তারপরও কাজ হয়নি৷’’

মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি গ্যাসের লাইন মেরামতের জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে গ্যাস কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ করে আসছিল বলে জানান তিনি৷ ‘‘এক পর্যায়ে মেরামতের জন্য তিতাস গ্যাসের লোকজন ৫০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করে৷ আমরা এই ঘুসের টাকা যোগাড়ের চেষ্টা করছিলাম৷ স্থানীয়দের কাছ থেকে গ্যাস লাইন মেরামতের জন্য চাঁদা তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলাম৷ কিন্তু তার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়,’’ বলেন তিনি৷

কিন্তু এই অভিযোগ অস্বীকার করেন নারায়ণগঞ্জ তিতাসের উপ মহা ব্যবস্থাপক মফিজুল ইসলাম৷ তিনি দাবি করেন, ‘‘মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে আমাদের গ্যাস লাইনে ত্রুটির কথা কখনোই জানানো হয়নি৷ আর মেরামতের জন্য কোনো ঘুস দাবির অভিযোগও সত্য নয়৷’’  গ্যাস লাইনের ত্রুটির কারণে মসজিদে বিস্ফোরণ হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের এই দাবি মানতেও তিনি নারাজ৷ বলেন, ‘‘মাটি খুঁড়ে দেখতে হবে গ্যাস লাইনে কোনো ত্রুটি বা ছিদ্র আছে কিনা৷ তার আগে বলা যাবে না৷’’

তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী মো. মামুন বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে তাই আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না৷'' ঘুস দাবির অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘তারা বলছেন৷ কিন্তু কে ঘুস চেয়েছে তা বলতে পারছেন না৷ তিনি কি তিতাসের কর্মচারী না দালাল৷ আমাদের তা সুনির্দিষ্টভাবে জানালে আমরা দেখব৷’’

কে ঘুস চেয়েছে তারা তা বলতে পারছেন না: আলী মো. মামুন

This browser does not support the audio element.

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘‘মসজিদে গ্যাসের কারণেই যে আগুন লেগেছে প্রাথমিক তদস্তে আমরা তা নিশ্চিত৷ তবে তা তিতাসের গ্যাস লাইন না সেখানে গ্যাসের খনি আছে তা তদন্ত করে দেখা যেতে পারে৷’’

তিনি জানান, ‘‘আমরা মসজিদের ভিতরে গ্যাসের উপস্থিতি পেয়েছি, ফ্লোরের দুই টাইলস-এর মধ্যেও গ্যাস পেয়েছি৷ বিস্ফোরণের কয়েক ঘন্টা পরেও মসজিদের ভেতরে আমরা শতকরা ১৭ ভাগ মিথেন গ্যাস পেয়েছি৷ বাতাসে যদি শতকরা চার ভাগের বেশি মিথেন গ্যাস থাকে তাহলে হালকা বিস্ফোরণ হতে পারে৷ আর ১৬-১৭ ভাগের বেশি মিথেন থাকলে তা উচ্চ মাত্রার বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে অন্যান্য উপাদানের সাথে মিশে৷’’

তিতাসের দাবির উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘গ্যাস লাইন খুঁড়ে দেখার দরকার নাই৷ আমরা তো সেখানে গ্যাস পেয়েছি৷ এখন সেটা তিতাসের গ্যাস না হয়ে অন্য কোনো গ্যাস কিনা তা বিস্তারিত তদন্তে জানা যাবে৷ গ্যাস পেয়েছি এটাই বাস্তবতা৷’’

এদিকে এই ঘটানায় পুলিশ বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে৷ অবহেলার কারণে বিস্ফোরণ ও মৃত্যু হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে৷ কাউকে সরাসরি আসামি না করা হলেও তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি ও মসজিদ কমিটি দায়ী হতে পারে বলে অভিযোগ করা হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ