বাংলাদেশে একতরফা জাতীয় নির্বাচনের দুই বছর পূর্তি হলো৷ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনে ক্ষমতার বাইরে থাকা সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং জোট অংশ নেয়নি৷ আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচনে ফের ক্ষমতায় আসে৷
বিজ্ঞাপন
সেই সময় আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে সংবিধান রক্ষার নির্বাচন বলেছিল৷ বিএনপি একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসলেও মধ্যবর্তী সেই নির্বাচনের আর সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্লেষকরা৷
এবার ৫ জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুই দলই কর্মসূচি পালন করেছে৷ আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয়' নামে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দু'টি সমাবেশ করেছে৷ তবে কোনো সমাবেশেই ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা৷ ওদিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা' নামে সমাবেশ করেছে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে৷ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এই সমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারের সমালোচনা এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করলেও তিনি সরকার বিরোধী নতুন কোন কর্মসূচি ঘোষণা করেননি৷
অবরোধ-হরতালে বিপর্যস্ত জনজীবন
বাংলাদেশে টানা অবরোধ ও হরতালের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্দশা৷ ক্রেতার অভাবে বেচাকেনা প্রায় শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে৷ শুধু অর্থনীতি নয়, চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় মুষড়ে পড়েছে পরিবহন ও শিক্ষা ব্যবস্থাও৷
ছবি: DW/M. Mamun
দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন
পুরনো ঢাকার বাবু বাজারে কাগজ বোঝাই একটি ট্রাকে জ্বলছে দুষ্কৃতিকারীদের দেয়া পেট্রোল বোমার আগুন৷ গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে চলছে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ৷ ডাকা হচ্ছে হরতালও৷ অবরোধ-হরতালে সবচেয়ে আলোচিত পেট্রোল বোমা৷ শুধু পেট্রোল বোমার আগুনেই পুড়ে মরেছে কমপক্ষে ৬৫ জন সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
পুলিশ প্রহরায় চলছে পরীক্ষা
ঢাকার মতিঝিল আইডিয়িাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে পুলিশ প্রহরা৷ চলমান এ অবরোধ-হরতালে যাঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তার মধ্যে শিক্ষার্থীরা অন্যতম৷ বর্তমানে সারা দেশে চলা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন তাই অনেকটাই অনিশ্চয়তার মুখে৷ টানা অবরোধের মধ্যে ছুটির দিনগুলোতে চলছে পরীক্ষা৷ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও৷
ছবি: DW/M. Mamun
দূরপাল্লার বাস নেই বললেই চলে
বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলির ডাকা অবরোধে বাংলাদেশের প্রধান সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিত্ত৷ দুপুর বেলায় তোলা এ ছবিতে মহাসড়কটি প্রায় যানবাহন শূন্য৷ কিন্তু সাধারণ সময়ে এ সড়কটি থাকে যানবাহনে ভরা৷ বাংলাদেশে চলমান অবরোধে দূর পাল্লার গাড়ি চলাচল কমে গেছে বহুলাংশে৷ একের পর এক পেট্রোল বোমার ঘটনায় ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাচ্ছেন না অনেক মালিকই৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিজিবি-র টহল পর্যাপ্ত নয়
অবরোধের মধ্যে বাংলাদেশের মহাসড়কগুলোয়, মানে ঢাকার বাইরে বিজিবি-র টহল থাকলেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য৷ এছাড়া সম্প্রতি রাত ন’টার পরে বাস চলাচলে সকলকে নিরুৎসাহ করার কারণে বাস মালিকদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ঢাকায় অস্বাভাবিক নয় যানজট
বাংলাদেশে চলমান এই অবরোধে ঢাকার ভেতরের সড়কের দৃশ্য অবশ্য আলাদা৷ যান চলাচল অন্যান্য সময়ের চেয়ে তুলনামূলক কম হলেও, অনেক জায়গাতেই যানজট দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসযাত্রীরা
ঢাকার ফার্মগেটে অফিস শেষে গাড়ির অপেক্ষায় বাড়িমুখী মানুষের ভিড়৷ টানা অবরোধে গণ পরিবহন ব্যবস্থা বেহাল হলেও, অর্থাৎ গাড়িঘোড়ার চলাচল কম থাকাতে দুর্ভোগ বেড়েছে অফিসমুখী ও অফিস ফেরত মানুষের৷ অফিসে যেতে বা অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে সাধারণ মানুষ তাই পড়ছেন দুর্ভোগে৷
ছবি: DW/M. Mamun
অবরোধে নদীপথের ভিন্ন চিত্র
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদীবন্দর ঢাকার সদরঘাটের চিত্র এটি৷ গত একমাসেরও বেশি সময়ের এই অবরোধে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া উল্লেখযোগ্য বড় কোনো সহিংসতা ঘটেনি নদীপথে৷ তাই নদীপথে যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিকই আছে৷ ঢাকা থেকে প্রধানত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোয় নৌ-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি৷
ছবি: DW/M. Mamun
যাচ্ছে না দূরপাল্লার বাসগুলো
বিএনপি ও সমমনা দলের জোটসমূহের ডাকা হরতাল-অবরোধে ঢাকার অন্যতম প্রধান বাস স্টেশন গাবতলীর দৃশ্য এটি৷ বেশিরভাগ দূর পাল্লার রুটের বাসই এ স্টেশনে পার্ক করে রাখা৷ হরতাল-অবরোধে দূর পাল্লার বাস চলাচল অনেকাংশেই বন্ধ আছে বাংলাদেশে৷
ছবি: DW/M. Mamun
খদ্দেরহীন এক রেস্তোরাঁ
ঢাকার গাবতলী বাস স্টেশনের খদ্দেরশূন্য মোহাম্মাদীয়া রেস্তোরাঁ৷ অবরোধের কারণে এ রেস্তোরাঁর লোকবল ১৬ জন থেকে ৮ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে৷ বাকি যে আটজন আছেন তাঁদেরও নিয়মিত বেতন পরিশোধ করতে পারছেন না মালিক৷ গাবতলী স্টেশন থেকে দূর পাল্লার বাস চলাচল কম থাকায় এ রেস্তোরাঁটি দিনের বেশিরভাগ সময় খালি থাকছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাড়ি ফেরা নিয়ে উদ্বিগ্ন মানুষ
অবরোধ আর হরতালকারীদের প্রধান লক্ষ্য সড়কে চলাচলকারী বাস আর ট্রাক৷ বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতগুলো হামলার ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগেই যাত্রীবাহী বাস কিংবা ট্রাকে৷ এতে কমপক্ষে ৬০ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে পোড়ায় ক্ষত শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছেন আরো শতাধিক সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
কমলাপুর রেল স্টেশনে অপেক্ষায় যাত্রীরা
অবরোধে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল করলেও, সময়সূচি ঠিক রাখতে পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ৷ বিভিন্ন সময়ে অবরোধকারীদের রেল লাইনের ‘ফিশপ্লেট’ খুলে ফেলার কারণে কয়েকটি ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনায় ট্রেনের গতি কমিয়ে চালাতে হচ্ছে৷ তাই বেশিরভাগ ট্রেনই স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কমপক্ষে তিন-চার ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন৷
ছবি: DW/M. Mamun
খেটে খাওয়া মানুষের দুর্দশা
টানা অবরোধ-হরতালে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ফুটপাথের ভ্রাম্যমাণ দোকানদাররা৷ স্বল্প পুঁজির এ সব ব্যবসায়ীদের বিক্রি কমে যাওয়ায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে অনেকেরই৷
ছবি: DW/M. Mamun
পুঁজি ভেঙে চলছে যাঁর সংসার
ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকার ফুটপাথে কম্বলের ব্যবসা করেন গাজীরুল ইসলাম৷ দুপুরবেলা পর্যন্ত এ দিন তাঁর বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৭’শ টাকার একটি কম্বল৷ তাও তার কেনা দামের থেকে ৩০০ টাকা কম৷ লাভ তো দূরের কথা সংসার চালাতে এখন পুঁজি টুকুনিই ভরসা৷
ছবি: DW/M. Mamun
অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রই যখন ভরসা
ঢাকার নবাবপুর থেকে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র নিয়ে ফিরছেন এক গাড়ি চালক ও তাঁর সহকারী৷ টানা অবরোধ-হরতালে পেট্রোল বোমার ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা হিসেবে নিজেদের গাড়িতে এখন থেকে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখবেন তাঁরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
14 ছবি1 | 14
এবার বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের সমাবেশকে ‘সমঝোতার' সমাবেশই বলছেন বিশ্লেষকরা৷
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনেই কোনো নির্বাচন হয়নি৷ একক প্রার্থী থাকায় তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয় লাভ করেন৷ আওয়ামী লীগ দুই তৃতীয়াংশ আসন পায়৷ এরশাদের জাতীয় পার্টি হয় সংসদে বিরোধী দল৷
এই নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিকে ঘিরে গত বছর চলা বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় কমপক্ষে ৯৫ জন প্রাণ হারান৷ প্রায় তিন মাস ধরে আন্দোলন করার পর সেই অবস্থা থেকে সরে আসে বিএনপি৷ তারা সবশেষ পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নেয়৷ বিএনপি নেতারা বলছেন, তাঁরা এখন আন্দোলনের চেয়ে দল গোছানোর কাজেই বেশি মনোযোগী৷ আর নির্বাচনে অংশ নেয়াই এখন তাদের আন্দোলনের কৌশল৷
ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ
জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ (জানিপপ) এর প্রধান এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করেছে৷ তারা নির্বাচনে ফিরছে৷ তবে বাংলাদেশে নির্ধারিত সময়ের আগে মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা আমি দেখছি না৷ কারণ বিএনপি তাদের দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি৷''
অধ্যাপক কলিমুল্লাহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেও নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখেন না৷ তিনি মনে করেন, এই সরকারের মেয়াদপূর্তির পর তাদের অধীনেই নির্বাচন হবে৷ বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সবদেশে সম্ভব হলে আমাদের দেশেও সেটা সম্ভব করতে হবে৷''
তিনি মনে করেন, ‘‘সামনে রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারার সৃষ্টি হতে পারে৷ নির্বাচমুখীতাই তার ইঙ্গিত দেয়৷''
তাঁর মতে, ভিতরে ভিতরে রাজনৈতিক সংলাপ চলছে৷ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা কথা বলছেন৷ বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের এবারের ৫ জানুয়ারির নমনীয় কর্মসূচি দেখলেই তা বোঝা যায়৷
আপনি কি ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ সাহেবের সঙ্গে একমত? জানান নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷
বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাস
স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ১১ বার সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য৷
ছবি: Anupam Nath/AP/picture alliance
প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ সে সময় ৩০০ আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়৷ আর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ছিল ১৫টি৷ ঐ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ৭ এপ্রিল, তেজগাঁওয়ে অবস্থিত তখনকার জাতীয় সংসদ ভবনে৷ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৩টিতে জয়লাভ করে৷ বঙ্গবন্ধু সে সময় ঢাকা-১২ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন৷
ছবি: AP
দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন, প্রথম নারী সাংসদ
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ হয়৷ সেবার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ছিল ৩০টি৷ তবে ঐ সংসদেই প্রথমবারের মতো প্রত্যক্ষ ভোটে একজন নারী সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ খুলনা-১৪ থেকে নির্বাচিত হন সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ৷ প্রথম অধিবেশন বসেছিল ২ এপ্রিল৷ নির্বাচনে মাত্র মাস ছয়েক আগে প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি ২০৭টি আর আওয়ামী লীগ ৫৪টি আসন পেয়েছিল৷
ছবি: imago stock&people
তৃতীয় সংসদ নির্বাচন
ভোটগ্রহণ হয় ১৯৮৬ সালের ৭ মে৷ জাতীয় পার্টি ১৫৩টি, আওয়ামী লীগ ৭৬টি আর জামায়াতে ইসলামী ১০টি আসন পায়৷ বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করেছিল৷
ছবি: http://www.parliament.gov.bd
চতুর্থ সংসদ নির্বাচন
১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ আওয়ামী লীগ, বিএনপি সহ বেশ কয়েকটি দল এই নির্বাচন বর্জন করেছিল৷ জাতীয় পার্টি আসন পেয়েছিল ২৫১টি৷ সংরক্ষিত মহিলা আসন সংক্রান্ত আইনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এই সংসদে মোট আসন সংখ্যা ছিল ৩০০টি৷
ছবি: http://www.parliament.gov.bd
পঞ্চম সংসদ নির্বাচন
তৎকালীন প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি ১৪০টি, আওয়ামী লীগ ৮৮টি আর জাতীয় পার্টি ৩৫টিতে জয়লাভ করে৷ এছাড়া নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে ৩০ জন মহিলাকে সাংসদ নির্বাচিত করা হয়৷ অবশ্য তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটি সংবিধানের অংশ ছিল না৷ পরের সংসদে সেই বিল পাস হয়েছিল৷
ছবি: Getty Images
ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি৷ আওয়ামী লীগ সহ অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল নির্বাচনটি বর্জন করেছিল৷ ফলে মোট ভোট গৃহীত হয়েছিল মাত্র ২১ শতাংশ৷ ৩০০টি আসনের মধ্যে বিএনপি ২৭৮টিতে জয়লাভ করেছিল৷ মাত্র চার কার্যদিবসে সংসদ বসার পর তা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়৷ এই সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস হয়৷
ছবি: picture-alliance/Dinodia Photo
সপ্তম সংসদ নির্বাচন
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪৬, বিএনপি ১১৬ ও জাতীয় পার্টি ৩২টি আসনে জয়লাভ করে৷ পরে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ৷
ছবি: Reuters
অষ্টম সংসদ নির্বাচন
ভোটগ্রহণ হয় ২০০১ সালের ১ অক্টোবর৷ অষ্টম সংসদের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ৩০০টি৷ কারণ সংরক্ষিত মহিলা আসন সংক্রান্ত আইনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় শুরুতে কোনো মহিলা আসন ছিল না৷ পরে আইন করে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ এ উন্নীত করা হয়৷ নির্বাচনে বিএনপি ১৯৩ আর আওয়ামী লীগ ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছিল৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
নবম সংসদ নির্বাচন
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে অনুষ্ঠিত সবশেষ নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর৷ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার পেয়েছিল ২৬৩টি আসন৷ আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট পায় ৩৩টি আসন৷
ছবি: picture-alliance/A.A./N. Kumar
দশম সংসদ নির্বাচন
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি৷ ফলে ১৫৩ জন সাংসদ কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই সাংসদ নির্বাচিত হন৷
ছবি: DW/M. Mamun
একাদশ সংসদ নির্বাচন
বাংলাদেশের সবশেষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৮ সালে৷ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া এই নির্বাচনে সংসদের ৩০০ আসনের ২৮৮টিই পেয়েছিল ক্ষমতাসীন দল ও মহাজোট৷ সেই নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট পড়েছে পাঁচ ভাগের চার ভাগ৷ ঘটেছে নজিরবিহীন ঘটনাও৷ ২১৩টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে৷ প্রায় আট হাজার কেন্দ্রে পড়েছে ৯০ শতাংশের বেশি৷