পাসওয়ার্ড ভাগাভাগি বন্ধের নিয়ম চালু করায় এ বছর ৬০ লাখ নতুন সাবস্ক্রাইবার পেলো নেটফ্লিক্স৷
বিজ্ঞাপন
২০২৩ সালে নেটফ্লিক্স কর্তৃপক্ষ জানায় যে, তাদের সাবস্ক্রাইবার বেড়েছে প্রায় ৬০ লাখ! পাসওয়ার্ড অন্য কারো সাথে ভাগ করে নেবার ক্ষেত্রেকড়াকড়ি বাড়িয়েই এমন ফলাফল, জানালো তারা৷
বুধবার নেটফ্লিক্স জানায়, এখন তাদের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২৪ কোটি৷ এর আগে ১০ কোটি বাসায় পাসওয়ার্ড ভাগ করে নেটফ্লিক্স ব্যবহার করতেন অনেকে৷
নাভালিয়ের অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস সংস্থার প্রধান বিনিয়োগকর্তা লুইস নাভালিয়ের বলেন, ‘‘আমি এই ফলাফল দেখে উচ্ছ্বসিত ছিলাম৷ আমার মতে, ধারণার চেয়েও বেশি নতুন সদস্য আনতে পেরেছে নেটফ্লিক্স৷''
প্রথম ধাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিতে পরীক্ষা করে নেটফ্লিক্স৷ এই একই পরিকল্পনা এখন গোটা বিশ্বে ব্যবহার করার ইচ্ছে তাদের৷
২০২০ সালে অতিমারির পর থেকে বাড়ে বাসা থেকে কাজ করার ঝোঁক৷ বাড়তে থাকে মানুষের নেটফ্লিক্সে কিছু দেখার আগ্রহও৷ ফলে লোকসান হতে থাকে তাদের৷
এই সমস্যা ঠেকাতে পাসওয়ার্ডহীন, বিজ্ঞাপনসহ সাবস্ক্রিপশন চালু করে তারা, যা আরো সস্তাও৷ প্রথমে মানুষ এই পদক্ষেপকে সন্দেহের চোখে দেখলেও পরে তারা নেটফ্লিক্সের পূর্ণ সাবস্ক্রিপশন নিতে শুরু করে৷
নেটফ্লিক্সের এই আপাত সাফল্য শেয়ারবাজারে সুফল আনতে পারেনি৷ শেয়ারের দাম পড়ে যায় আট শতাংশ৷ তার সাথে রয়েছে চলমান শিল্পী, চলচ্চিত্র কলাকুশলীদের ধর্মঘটের বিষয়টিও৷
নেটফ্লিক্সের প্রধান (যুগ্ম) টেড সারানডস বলেন, ‘‘আমরা এই ব্যবসার সাথে জড়িত সবার সাথে নিয়মিত আলোচনা চালাচ্ছি৷ এই ধর্মঘটেরও ইতি দরকার, যাতে আমরা সবাই এগোতে পারি৷''
ডিজিটাল বিশ্বের নানা বিষয় নিয়ে গবেষণা করে স্যান্ডভাইন৷ সংগঠনটির গ্লোবাল ইন্টারনেট ফোনোমেনা রিপোর্ট ২০২৩ অনুযায়ী বিশ্বজুড়ে ডেটা ব্যবহারে এই প্রথমবার ইউটিউবকে পেছনে ফেলেছে নেটফ্লিক্স৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Spata
১০ অ্যাপেই অর্ধেক ডেটা
বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ ইন্টারনেট ব্যবহার হয়, তার অর্ধেকের বেশি ব্যবহার হয় ১০টি অ্যাপেই৷ সেগুলো হচ্ছে, ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, জেনেরিক কিউইউআইসি, ফেসবুক, এইচটিটিপি মিডিয়া স্ট্রিম, ডিজনি প্লাস, টিকটক, এক্সবক্স লাইভ, প্লেস্টেশন এবং অ্যামাজন প্রাইম৷
ছবি: Silas Stein/dpa/picture alliance
ইন্টারনেটের ট্র্যাফিক দখলে সাত প্রতিষ্ঠান
সবচেয়ে বেশি মানুষ এখনও নেটফ্লিক্স, মাইক্রোসফট, অ্যালফাবেট, মেটা, অ্যামাজন এবং অ্যাপলের বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করেন৷ বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের প্রায় ৪৮ শতাংশ এই সাত প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করেন৷ কিন্তু ২০২১ সালের তুলনায় এদের সম্মিলিত ডেটা ব্যবহার কমে এসেছে৷ নতুন নতুন নানা অ্যাপ মানুষকে আকৃষ্ট করায় বেড়েছে প্রতিযোগিতা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Warnecke
ভিডিওতেই বেশি ডেটা
স্যান্ডভাইন বলছে, ২০২২ সালে ইন্টারনেটে ভিডিও দেখার হার বেড়েছে ২৪ শতাংশ৷ এখন বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেটের ৬৫ শতাংশই খরচ হয় ভিডিও দেখতে৷
একক অ্যাপ হিসাবে সবচেয়ে বেশি ডেটা ব্যবহারে প্রথমবারের মতো ইউটিউবকে টপকে গেছে স্ট্রিমিং সার্ভিস নেটফ্লিক্স৷ বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত ইন্টারনেট ডেটার ব্যবহারে ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশই নেটফ্লিক্সের৷ ১০ দশমিক ৫১ শতাংশ নিয়ে ইউটিউব অবশ্য খুব একটা পিছিয়ে নেই৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/J. Arriens
গেমে শীর্ষে প্লেস্টেশন
প্লেস্টেশন ডাউনলোডস ছাড়াও শীর্ষ ১০ এর তালিকাতে রয়েছে স্টিম, রোবলোক্স, নিনটেন্ডো, এক্সবক্স লাইভ ইত্যাদি৷
ছবি: Fleig/Eibner-Pressefoto/picture alliance
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিসে ফেসবুক বেশ পিছিয়ে নয় নম্বরে থাকলেও সামাজক যোগাযোগ মাধ্যম ক্যাটাগরিতে ফেসবুকের আশেপাশে নেই কেউ৷ মেটার আরেকটি মাধ্যম ইনস্টাগ্রাম রয়েছে তৃতীয় স্থানে৷ এছাড়া টুইচ, স্ন্যাপচ্যাট, রেডিট, ওয়ার্ডপ্রেস, পিন্টারেস্ট, টুইটার, ভিকে এবং লিংকডইন রয়েছে এই তালিকায়৷
ছবি: Jonathan Raa/NurPhoto/picture alliance
ম্যাসেজিং
প্রতিবেদন বলছে, করোনা মহামারির পর ফোন থেকে ফোনে ভয়েস এবং টেক্সট ম্যাসেজ দেয়ার পরিমাণও বেড়েছে৷ তালিকাতে জেনেরিক ম্যাসেজিং রয়েছে শীর্ষে৷ এরপরেই মেটার দুই পণ্য হোয়াট্স অ্যাপ এবং ফেসবুকের নাম রয়েছে৷ তালিকায় আরো রয়েছে ডিসকর্ড ভয়েস, টেলিগ্রাম, মাইক্রোসফট টিমস এর মতো অ্যাপগুলো৷