বয়স ৬৮ বছর৷ তাতে কী? শিক্ষা গ্রহণের তো কোনো বয়স হয় না! তাই নেপালের নিম্নবর্ণের মানুষ দুর্গা কামি দশম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন, নতুন করে শুরু করেছেন শিক্ষাজীবন৷
বিজ্ঞাপন
বয়স ও শ্রেণিবৈষম্য যে শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নয়, তা আবারও প্রমাণ করছেন নেপালের সবচেয়ে বেশি বয়সের শিক্ষার্থী দুর্গা৷ ৬ সন্তানের জনক এবং আটজন নাতি নাতনির দাদা ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মৃত্যুর আগে তিনি স্কুলের শিক্ষা শেষ করতে চান৷ দুর্গার জীবনযাপন কিন্তু সহজ ছিল না, কারণ, তিনি দলিত৷ পদে পদে তাঁকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে৷
তাঁর এই ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৯১ হাজার বার৷ শেয়ার হয়েছে হাজারেরও বেশি বার৷ মন্তব্যে অনেকেই লিখেছেন, দুর্গার এই পদক্ষেপ অনেক মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগাবে৷
স্ত্রীর মৃত্যুর পর একাকীত্ব দূর করতে দুর্গা আবারও স্কুলে যাওয়া শুরু করেন৷ একে দলিত, তার ওপর আবার দারিদ্যের চাপে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে না পারা দুর্গা এখন শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন৷ একটি লাঠি নিয়ে দীর্ঘ পথ হেঁটে তিনি রোজ স্কুলে যাতায়াত করেন৷ তাঁর এই পদক্ষেপ অনেক দলিতকেই শিক্ষা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আশা করেন দুর্গা৷
দুর্গার সহপাঠীরা তাঁকে ‘বাবা' বলে ডাকে৷ বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে টর্চের আলোয় লেখাপড়া করেন দুর্গা৷
তিনি আমৃত্যু লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চান৷ দুর্গা আশা করছেন, তাঁকে দেখে আরও অনেকে উৎসাহ পাবেন এবং বয়সের বাধা কাটিয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করবেন৷
পড়ালেখার জন্য জীবনের ঝুঁকি নেয় ওরা
চীনের ১৫ জন শিশুর কয়েকটি ছবি সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে৷ পাহাড়ের ওপরে তাদের বাড়ি৷ স্কুল শেষে বাড়ি ফিরতে মইয়ে চড়ে ৮০০ মিটার ওপরে উঠতে হয় তাদের৷ শিশুদের এমন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুল থেকে ফেরার দৃশ্য দেখে অবাক না হয়ে পারা যায়!
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Jie/VCG
চীন এবং শিক্ষা
বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে, খেলাধুলায়, অর্থনীতিতে বলতে গেলে সবদিকেই দ্রুত উন্নতির পথ ধরে এগিয়ে চলেছে চীন৷ ইউনেস্কোর সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, চীনে শিক্ষার বর্তমান হার ৯৬ দশমিক ৪ শতাংশ৷ জ্ঞান-বিজ্ঞানে চীনের খ্যাতি অবশ্য প্রাচীন কাল থেকেই৷
ছবি: Getty Images/AFP
অগ্রগতির বিপরীতে
চীনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই৷ তাই কমিউনিস্ট শাসিত দেশটির প্রসঙ্গে দ্রুত উন্নতির বিষয়টির পাশাপাশিই সংবাদমাধ্যমের ওপর সরকারের অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও আলোচনায় আসে৷
ছবি: Reuters
শিশুমুখগুলো চমকে দিলো...
হ্যাঁ, সেই চীনের গণমাধ্যমেই এসেছে ১৫টি শিশুর এমন এক কিছু ছবি যা দেখে শুধু চীন নয়, বলতে গেলে বিশ্বের প্রায় সব দেশের মানুষই বিস্ময়ে হতবাক৷ ছবিতে দেখা যায়, ৬ থেকে ১৫ বছর বয়সি ১৫টি শিশু খাড়া পাহাড়ের গায়ে মই বেয়ে বেয়ে ৮০০ মিটার ওপরের ছোট্ট এক গ্রামে ফিরছে৷ পশ্চিম চীনের সিচুয়ান প্রদেশের পাহাড়ের ওপরের সেই গ্রামটির নাম আতুলির৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Imaginechina Tao ge
কৃষকদের ঠকাতে....
৭২টি পরিবার রয়েছে ওই গ্রামে৷ সবাই কৃষিজীবী৷ বাঁশের মই বেয়ে বেয়ে তো আর ফসল নিয়ে নামা সম্ভব নয়৷ আর লোহার মই বা ভালো রাস্তা করার আর্থিক সংগতিও গ্রামবাসীর নেই৷ ভালো রাস্তা হলে চাষিরা ফসল নিয়ে দূরের বাজারে গিয়ে ভালো দামে সেই ফসল বিক্রি করতে পারে ভেবে ফড়িয়ারাও এতদিন সেখানে রাস্তা তৈরি হতে দেয়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Jie/VCG
এবার হয়তো রাস্তা হবে
চীনের এক ইংরেজি দৈনিকে কয়েকদিন আগেই প্রকাশিত হয় আতুলির গ্রামের শিশুদের মই বেয়ে বেয়ে ৮০০ মিটার ওপরের বাড়ির দিকে যাত্রা করার দৃশ্য৷ গ্রামের আশেপাশে কোনো স্কুল নেই৷ তাই শিশুদের দূরের কোনো স্কুলে যেতে হয়৷ সেই স্কুলের হস্টেল থেোকে সপ্তাহে দু’দিন বাড়ি আসা যায়৷ সেদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথেই অসম সাহসী শিশুরা ক্যামেরাবন্দি হয়৷ তাদের ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর সরকার রাস্তা নির্মাণে আগ্রহ দেখিয়েছে৷