বাংলাদেশের গ্রামের মেয়েদের ঋতুস্রাবের সময় যেন বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ না হয় সেজন্য বিনামূল্যে স্যানিটারি প্যাড দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার৷
বিজ্ঞাপন
তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান এএফপিকে বলেন, আগামী বছরের শুরুতে ৯০ হাজার গ্রামে এমন একটি প্রকল্প চালুর পরিকল্পনা করছে সরকার৷
গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ঋতুস্রাব নিয়ে এক ধরনের ট্যাবু রয়েছে৷ ঋতুস্রাবের সময় ৪০ শতাংশ ছাত্রী বিদ্যালয়ে না গিয়ে বাড়িতে থাকে৷
এমবিবিএস ডিগ্রীধারী মুরাদ হাসান এর আগে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা খুবই উদ্বেগজনক, আমরা তাদের ভবিষ্যৎকে ঝুঁকিতে রাখতে পারি না৷ ঋতুস্রাবের প্যাডের অপ্রাপ্যতা, এবং স্বাস্থ্যসম্মত প্যাডের দাম বেশি হওয়া এবং বিদ্যালয়গুলোতে এগুলো না থাকায় ওই সময় ছাত্রীরা স্কুলে যায় না৷
গ্রামগুলোতে বাংলাদেশের ৬৩ শতাংশ মানুষ বসবাস করে৷ দরিদ্র অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের ঋতুস্রাবের সময় স্বাস্থ্যসম্মত প্যাড কিনে দিতে পারেন না বলে ওই সময় তাদের বাড়িতেই থাকতে বলেন৷
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মাত্র ছয় শতাংশ বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে ঋতুস্রাব বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে৷
বিভিন্ন দাতা সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ঋতুস্রাব সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান মুরাদ হাসান৷
সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু৷ তিনি এএফিপকে বলেন, ''আমরা দীর্ঘদিন ধরে এটা দাবি করে আসছি৷ এটি খুবই ইতিবাচক উদ্যোগ, যা সামাজিক দৈন্যতা মোকাবেলায় সহায়তা করবে৷ এই উদ্যোগটি অবশ্যই ঝরে পড়ার হার কমাতে সহায়তা করবে৷’’
এআই/এসিবি (এএফপি)
‘ট্যাবলেট’ ছাড়াই মাসিকের ব্যথা লাঘব করার উপায়
ঋতুস্রাবের সময় প্রায় প্রতিটি মেয়েরই শরীরে নানা ধরনের ব্যথা হয়৷ আর সেসব ব্যথা লাঘবের জন্য তাঁরা নানা ঔষুধও সেবন করে থাকেন৷ তবে ওষুধ ছাড়াও কিন্তু সেই সময়ে সুস্থ থাকার বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে৷ জেনে নিন সে উপায়গুলো৷
ছবি: picture-alliance/prisma
ওষুধে বরং ক্ষতি...
মাসিকের সময় কিংবা কারো কারো ক্ষেত্রে তার আগেই তলেপেটে, মাথায়, কোমরে বা পায়ে ব্যথা হয়ে থাকে, যা খুবই স্বাভাবিক৷ তাছাড়া কারো কারো বমিভাবও৷ সব মিলিয়ে শরীরে হয় এক অস্বস্তিকরভাব৷ অনেকেই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ট্যবলেট সেবন করেন৷ তবে নিয়মিত ট্যবলেট সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/M. Baumann
ব্যথা দূর করতে গোসল
উষ্ণভাব বা কুসুমগরম পানি জরায়ুর পেশীগুলোকে একটু ঢিলা করতে সাহায্য করে৷ তাই বাথটবে কুসুম গরম পানিতে ল্যাভেন্ডার ফুলের পাপড়ি ছেড়ে দিন৷ এবার টবে ২০ মিনটের একটি বাথ নিন, এতে যে শুধু পেট ব্যথাই কমবে, তা নয়, কোমর ব্যথাও পালিয়ে যাবে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel
পেট মাসাজ
চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন৷ এবার বালিশ নিয়ে সেটাকে হাঁটুর নীচে দিয়ে পেট এবং নাভির ওপর ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কয়েকবার মাসাজ করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Becker
সুগন্ধী থেরাপি
মাসিকের ব্যথায় গোলাপ ফুলের তেলের উপকারিতার কথা অনেকেই জানেন৷ ৩ থেকে ৪ ফোঁটা গোলাপের তেল মেখে একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে দিন৷ এতে ধীরে ধীরে বমিভাব দূর হয়ে মন-মেজাজ ভালো করে দেবে৷ কারণ, পিরিয়ডের সময় বা তার আগে ও পরে হরমোনজনিত কারণে নানা ব্যথার সময়ে মেজাজ যে খিটখিটে থাকে তা বলাই বাহুল্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa
যোগব্যায়াম
শিশুদের মতো হামাগুড়ি দেয়ার মতো করুন৷ এবার নিতম্ব পায়ের গোড়ালিতে রেখে কপাল রাখুন মেঝেতে৷ এবং হাতদুটো সামনের দিকে সোজা করে ৩০ সেকেন্ড রাখুন৷ এভাবে কয়েকবার করলে পুরো শরীরেই অনেক আরাম বোধ হবে৷
ছবি: Reuters/F. Lenoir
ম্যাগনেশিয়ামর ঘাটতি দূর করুন
শরীরের ম্যাগনেশিয়ামের অভাবেও অনেক সময় নানা রকম ব্যথা হয়ে থাকে৷ তাই ম্যাগনেশিয়ামের অভাব পূরণ করতে কলা, সূর্যমূখী ফুলের বিচি এবং শষ্যদানা সমেত নুডলস খেতে পারেন৷
ছবি: Colourbox
হরতকি বা ‘ইয়োহানেস ক্রাউট’
হরতকি, জার্মান ভাষায় যাকে বলে ‘ইয়োহানেস ক্রাউট’, পুদিনা পাতা বা আদা চা দু’বেলা পান করতে পারেন৷ এতে শরীরের ম্যাজম্যাজভাব কমে শরীরকে হালকা করবে৷ এ পরামর্শগুলো দিয়েছেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ডা. ইয়োর্গ গ্রুনভাল্ড৷