1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জয়তু সিলেকশান’

৫ জানুয়ারি ২০১৪

ব্যাপক সহিংসতার মধ্য দিয়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে৷ রবিবারের ব্লগ পোস্ট আর ফেসবুক স্ট্যাটাসের বেশিরভাগই ছিল বহুল আলোচিত এই নির্বাচন নিয়ে৷ এখনো সেটা চলছে৷

Bangladesch Parlamentswahlen
ছবি: Reuters

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকে তাদের নির্বাচনি এলাকার পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন৷ কেউ ভোটার উপস্থিতি কত ছিল সেটা উল্লেখ করেছেন৷ আবার কেউ তাঁর ভোটকেন্দ্রের ছবি পোস্ট করেছেন৷ যেমন তাজুল তাজ লিখেছেন, তিনি যে কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন সেখানে নাকি মাত্র ৬.০১ শতাংশ ভোট পড়েছে৷

‘‘আমরা ঢাকা শহরে এমন একটাও কেন্দ্র পাইনি যেটাতে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটদানের সংখ্যা ১৫ শতাংশ অতিক্রম করেছে৷''ছবি: AFP/Getty Images

ঢাকার কাছে নবাবগঞ্জ ভোটকেন্দ্র থেকে এপি বার্তা সংস্থার বাংলাদেশ প্রধান জুলহাস আলম তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘দুপুর তিনটা পর্যন্ত সেখানে সাড়ে তিন হাজার ভোটারের এক তৃতীয়াংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন৷'' অবশ্য তাঁর এই মন্তব্যের নীচে বিবিসি বাংলার সাংবাদিক সাবির মুস্তফা কিছুটা অবাক হয়ে লিখেছেন, ‘‘এটা বিস্ময়কর৷ আমরা ঢাকা শহরে এমন একটাও কেন্দ্র পাইনি যেটাতে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটদানের সংখ্যা ১৫ শতাংশ অতিক্রম করেছে৷''

এদিকে অমি রহমান পিয়াল ফেসবুকে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম খুব ফলাও করে সন্ত্রাসের খবর প্রচার করছে, আবার বলছে এই নির্বাচন একটা প্রহসনের নির্বাচন, কারণ মানুষ এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না৷ কিন্তু কেউ বলছেনা আসল কথা – এতো সন্ত্রাসের মধ্যে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে, জামায়াত-বিএনপি রাষ্ট্রযন্ত্রের উপর প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে৷ এই অবস্থায় মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে কেমন করে?''

সামহয়্যার ইন ব্লগে মাছুম আহমদ তাঁর পোস্টের মাধ্যমে ভোটের অধিকার ফেরত চেয়েছেন৷ তিনি লিখেছেন, ২০০১ সালে যখন তাঁর বয়স ১০ ছিল তখন প্রথমবারের মতো নির্বাচনের আনন্দ বুঝতে পেরেছিলেন তিনি৷ তখন তাঁর মনে একটা আক্ষেপও কাজ করেছিল আর মনে হয়েছিল ‘‘ইশ! আমি যদি ভোট দিতে পারতাম৷'' এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আইডি কার্ড বানানোর সময় বয়স আঠারো না হওয়াতে ভোটার হতে পারেননি তিনি৷ তবে ব্লগার মাছুম আহমদ এবার ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন৷ কিন্তু সিলেট-১ আসনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় তিনি ভোটাধিকার প্রয়োগ করা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন৷ তাই তিনি প্রশ্ন করেছেন, ‘‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমার ভোট দেয়ার অধিকার থাকবে না কেন!!! আমার এতোদিনের অপেক্ষা যখন প্রাপ্তিতে পৌঁছুলো, তখন সরকার আমার অধিকার ছিনিয়ে নিলো কেন!!! কে দেবে আমার উত্তর? কার কাছে ফেরত চাইবো আমার অধিকার?''

একই ব্লগে তানভীর আরিফ পাবনায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমিন্ত্রীর ছেলের জোর করে ব্যালট বাক্সে সিল মারা ঘটনা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘‘স্বতন্ত্র প্রার্থীকেও এত ভয়! নির্বাচন নয় যেন গোপাল ভাঁড়ের গল্প৷''

জিএম শুভ লিখেছেন, গত নির্বাচনে তাঁর পরিবারের ১১ জন ভোটার আওয়ামী লীগে ভোট দিলেও এবার কেউ ভোট দিচ্ছে না৷ গত নির্বাচন নিয়ে তাঁর উত্তেজনার কথা লিখতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘গত নির্বাচনের কথা… আগের দিন থেকেই একটা উৎসব উৎসব ভাব ছিল! আমরা সবাই গ্রামের বাড়ি চলে গিয়েছিলাম… নির্বাচনের দিন সকালে বাড়িতে হৈ চৈ!… আমরা পিচ্চিরা মিলে নির্বাচনি কেন্দ্রে যাচ্ছিলাম আর আসছিলাম! আব্বার সাথে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলাম… আর এবার?? আমাদের পুরো পরিবার গতবার আওয়ামী লীগে ভোট দিলেও এবার কাউকেই ভোট দিচ্ছে না৷ যদিও এবার প্রথম প্রার্থী, দ্বিতীয় প্রার্থী আর তৃতীয় প্রার্থী সবাই আওয়ামী লীগের! গত নির্বাচনের সময় গ্রামে থাকলেও এবার নির্বাচনের আগের দিন আমি চলে এসেছি৷''

‘‘গত নির্বাচনের ১০০ ভাগের এক ভাগ উত্তেজনাও এবারের নির্বাচনে নাই…’’ছবি: Reuters

জিএম শুভ তাঁর পোস্টটি শেষ করেছেন এইভাবে, ‘‘মোটকথা, গত নির্বাচনের ১০০ ভাগের এক ভাগ উত্তেজনাও এবারের নির্বাচনে নাই… মনে হয় দেশ ডিজিটাল হয়ে গেছে, তাই এনালগ আমি এবারের নির্বাচনে কোনো উত্তেজনার টের পাচ্ছি নাহ!! R.I.P ইলেকশান!! জয়তু সিলেকশান৷''

আমারব্লগে কবির য়াহমদ লিখেছেন ‘‘সরকারের কাছে যা ‘সংবিধান রক্ষার নির্বাচন' বিরোধীদলের কাছে সেটা ‘প্রহসনের পাতানো নির্বাচন'৷ আর সাধারণ মানুষের কাছে আংশিক ভোট উৎসব অথবা আশঙ্কার অপর নাম৷ বাংলাদেশ কী পারছে এই আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিতে? প্রশ্নটা যত স্বাভাবিক তারচেয়ে অস্বাভাবিক তার উত্তর এবং ফলাফল৷ এ পরিস্থিতিতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুধুমাত্র এক নিয়ম রক্ষায় পর্যবসিত হয়ে গেছে সন্দেহ নেই৷''

সংকলন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ